—প্রতীকী চিত্র।
কলকাতা পুরসভার সমস্ত বিভাগের কর্মীরা কবে এত সকাল সকাল অফিসে ঢুকেছেন, তা মনে করতে পারছেন না বিভিন্ন বিভাগীয় আধিকারিকেরাই। মেয়র ফিরহাদ হাকিম আগেই ঘোষণা করেছিলেন, পুরসভার কর্মসংস্কৃতি ফেরাতে সমস্ত দফতরেই বায়োমেট্রিক হাজিরা পদ্ধতি চালু হবে। মেয়রের সেই নির্দেশ কার্যকর করতে আগেই কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রায় ১২ হাজার কর্মীর বায়োমেট্রিক হাজিরা চালু হয়েছে। গত মঙ্গলবার থেকে নতুন পদ্ধতি চালু হল কলকাতা পুরসভার সদর দফতরেও।
পুরসভা সূত্রের খবর, কলকাতা পুরসভার মেয়র’স বিল্ডিং, হগ বিল্ডিং, রক্সি বিল্ডিং, হাডকো বিল্ডিং, নগর পরিকল্পনা উন্নয়ন বিভাগ-সহ একাধিক বিভাগে গত মঙ্গলবার থেকে বায়োমেট্রিক হাজিরা পদ্ধতি চালু করতে ৩৫টি যন্ত্র বসেছে। পুরসভার সদর দফতরে প্রায় আড়াই হাজার কর্মীর জন্য এই পদ্ধতি চালু করেছেন কর্তৃপক্ষ। কলকাতা পুরসভার তথ্যপ্রযুক্তি দফতর রাজ্য সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের সহায়তায় এই ‘অনলাইন’ হাজিরা চালু করল। পুরসভার তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের এক আধিকারিক জানান, পুরকর্মীদের হাজিরা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য সল্টলেকের ওয়েবেল ভবনে সংরক্ষিত থাকছে। রাজ্য তথ্যপ্রযুক্তি দফতর এর জন্য আর্থিক সহায়তাও করেছে।
পুরসভার বিভিন্ন বিভাগের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, গত মঙ্গলবার বায়োমেট্রিক হাজিরা চালু হওয়ার পর থেকেই কর্মীদের ঠিক সময়ে দফতরে ঢোকার প্রবণতা বেড়ে গিয়েছে। গত সপ্তাহে পাঁচ দিন এই পদ্ধতি চালু হওয়ার পরে কর্মীরা নির্দিষ্ট সময়ে দফতরে ঢোকার পাশাপাশি বিকেল ৫টার পরে সেখান থেকে বেরোচ্ছেন।
পাশাপাশি তাঁরা এ-ও জানাচ্ছেন, অতীতে খাতায়কলমে হাজিরা পদ্ধতিতে অনেক কর্মীরই ‘ফাঁকি’ মারার প্রবণতা ছিল। কর্মীদের একাংশ দেরি করে দফতরে ঢুকতেন। আবার ছুটি হওয়ার আগেই সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিককে নানা কারণ দেখিয়ে বেরিয়ে যেতেন। কিন্তু নতুন পদ্ধতি চালু হওয়ার ফলে সেই সুযোগ কমেছে। পুরসভার আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, বায়োমেট্রিক হাজিরা পদ্ধতি অনুযায়ী, সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে কর্মীদের দফতরে ঢুকতে হবে। সপ্তাহে তিন দিন ১০টা ৪৫ থেকে ১১টা ১৫ মিনিটের মধ্যে ঢুকলে একটি ছুটি কাটা যাবে। পুরসভার এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘পুরকর্মীদের জন্য সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা প্রবাদ চালু ছিল, ‘আসি যাই, মাইনে পাই।’ বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু হওয়ার ফলে সেই ধারণা বদলাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।’’
পুরসভার তথ্যপ্রযুক্তি দফতর সূত্রের খবর, সদর দফতরের পরে ১৬টি বরো অফিসে ধাপে ধাপে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু হতে চলেছে। এক আধিকারিক জানান, আগামী ছ’মাসের মধ্যেই সব বরো অফিসে বায়োমেট্রিক হাজিরা পদ্ধতি চালু হয়ে যাবে।