—প্রতীকী চিত্র।
রেলের কোচিং ইয়ার্ডে বিশ্বকর্মা পুজো হয়েছিল। সেখানে বাবার সঙ্গে দেখা করে মোটরবাইক নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন ছেলে। কিন্তু মাঝপথেই ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন ওই যুবক। তাঁর বাইকটিও ট্রেনের চাকায় জড়িয়ে প্রায় ৩০-৪০ মিটার ঘষটে গেল। শেষে বাইকে আগুনও ধরে যায়। রেলকর্মীরাই নিজস্ব অগ্নি-নির্বাপণ যন্ত্র দিয়ে আগুন নেভান।
শুক্রবার বেলা ১২টা নাগাদ এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সাঁতরাগাছি কোচিং ইয়ার্ডে যাওয়ার রাস্তায়। রেললাইনের উপর দিয়ে আড়াআড়ি ভাবে চলে গিয়েছে ওই রাস্তা। রেলকর্মীদের অভিযোগ, কোনও আন্ডারপাস বা ফুট ওভারব্রিজ না থাকায় নিত্যদিন তাঁদের এবং রেলের কর্তাদের প্রাণ হাতে করে ওখান দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। যার ফলে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। তিন মাস আগে ঠিক ওই জায়গাতেই একই ভাবে ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু হয়েছিল রেলের এক কর্মীর। রেলকে বারবার বলা হলেও তারা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ।
দক্ষিণ-পূর্ব রেল সূত্রের খবর, এ দিন কোচিং ইয়ার্ডে বিশ্বকর্মা পুজো দেখে রেলের ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের কর্মী রাজু লালের সঙ্গে বাইক নিয়ে দেখা করতে এসেছিলেন ছেলে যশোবন্ত লাল (২১)। ফেরার সময়ে তিনি সম্ভবত খেয়াল করেননি, মেন লাইন দিয়ে দ্রুত গতিতে আসছে আপ ইস্ট-কোস্ট এক্সপ্রেস। ট্রেনের ধাক্কায় ছিটকে পড়েন তিনি। ট্রেনের চাকায় তাঁর বাইকটি জড়িয়ে গিয়ে কিছুটা যাওয়ার পরেই আগুন লেগে যায়। আতঙ্কে চিৎকার শুরু করেন যাত্রীরা। কিছু দূর গিয়ে দাঁড়িয়ে যায় ট্রেন। ছুটে আসেন রেল রক্ষী বাহিনীর জওয়ান ও রেলের কর্মীরা। তাঁরাই যশোবন্তকে উদ্ধার করে রেলের প্রাথমিক চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
দক্ষিণ-পূর্ব রেল মেন্স কংগ্রেস, শাখা (৩)-র সম্পাদক সুশান্ত ঘটক বলেন, ‘‘জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মেন লাইন পেরিয়ে কোচিং ইয়ার্ডে যেতে হয়। ইয়ার্ডের অবস্থাও খারাপ। ওই জায়গায় আন্ডারপাস এবং ফুট ওভারব্রিজ তৈরির দাবি জানিয়ে শীঘ্রই রেলকর্তাদের সঙ্গে দেখা করব।’’ দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ অফিসার সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। এর পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, তা সংশ্লিষ্ট আধিকারিকেরা খতিয়ে দেখবেন।’’