নেমেছিল এই ড্রোন। নিজস্ব চিত্র
মশা মারার তেল ছড়াতে কলকাতার ধাঁচে ড্রোনের ব্যবহার শুরু করেছিল বিধাননগর পুরসভাও। কিন্তু দু’টি ওয়ার্ডে মাটির ১০ ফুট উপর থেকে ড্রোনের সাহায্যে মশা মারার তেল স্প্রে করতে গিয়ে বেশ কিছু সমস্যার মুখে পড়ছে পুরসভা। তাই চলতি বছরে পুর এলাকার কোনও ঘিঞ্জি জনবসতি এবং গাছগাছালি বেশি রয়েছে এমন জায়গায় ড্রোন আপাতত ব্যবহার করা হবে না বলেই জানিয়েছেন পুর প্রশাসন।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে বিধাননগর এলাকায় মশাবাহিত রোগের প্রকোপ এক ধাক্কায় অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গি এবং জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার পেরিয়ে যায়। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় দু’জন মহিলার। এর পরে নড়েচড়ে বসেছিল প্রশাসন। স্থির করা হয়, কলকাতা পুরসভার মতোই পুর এলাকায় মশা মারার তেল ছড়াতে ড্রোনের সাহায্য নেওয়া হবে।
কিন্তু সম্প্রতি বিধাননগরের ৩৮ এবং ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে পরীক্ষামূলক ভাবে ওই ড্রোন ব্যবহার করতে গিয়েই সমস্যা টের পাওয়া যায়। পুরসভা সূত্রের খবর, প্রায় ৪ ফুট ব্যাসার্ধের ওই ড্রোনে ৩০ লিটার তেল ধরে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হয়েছিল যে, ড্রোনের সাহায্যে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই অনেকটা জায়গা জুড়ে মশা মারার তেল স্প্রে করা সম্ভব হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, বড় মাপের ওই ড্রোনটি যেহেতু মাটির ১০ ফুট উঁচু থেকে তেল স্প্রে করছে, তাই তা আশপাশের অনেকটা জায়গা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে। শুধুমাত্র নির্দিষ্ট লক্ষ্যে তেল দেওয়ার বদলে ঘিঞ্জি এলাকায় ওই মশা মারার তেল গিয়ে পড়ছে কখনও মানুষের মাথায়, কখনও বা বাড়ির বাইরে ঝোলানো জামাকাপড় বা জলভর্তি বালতিতে— বাদ যাচ্ছে না কোনও কিছুই। ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্মল দত্তের কথায়, ‘‘ঘিঞ্জি এলাকায় ১০ ফুট উঁচু থেকে তেল স্প্রে করলে আখেরে কোনও কাজ হচ্ছে না।’’ ড্রোনের এই সমস্যা দেখেও গিয়েছেন পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা।
এ প্রসঙ্গে মেয়র পারিষদ প্রণয় রায় বলছেন, ‘‘খুব ঘিঞ্জি এলাকায় বড় মাপের ড্রোন ব্যবহারে কাজ হবে বলে মনে হচ্ছে না। সে কথা স্বাস্থ্য দফতরকে জানানো হয়েছে। বরং কোনও ফাঁকা জায়গা, জলাশয় বা খালে বড় ড্রোন ব্যবহারে লাভ হবে।’’ তাই ঘিঞ্জি এলাকায় তেল ছড়াতে তুলনায় ছোট ড্রোনের (মাটির ৩ ফুট উপর থেকে তেল স্প্রে করতে পারবে) কথা ভাবা হচ্ছে। পুরসভাই সেই ড্রোন কিনে ব্যবহার করতে পারবে কি না, তা নিয়েও ভাবনাচিন্তা চলছে।