অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মমতা নিজের বক্তৃতায় নারীশিক্ষার প্রসারে বেথুন স্কুলের ভূমিকার উপর আলোকপাত করেন। ছবি: ফেসবুক।
নারীশিক্ষার প্রসারে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিল বেথুন স্কুল। বুধবার বেথুন স্কুলের ১৭৫তম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে উপস্থিত হয়ে এমনটাই বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মমতা নিজের বক্তৃতায় নারীশিক্ষার প্রসারে বেথুন স্কুলের ভূমিকার উপর আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষার ব্যাপ্তি না ঘটলে কোনও সমাজের অগ্রগতি হতে পারে না। আর মেয়েরা শিক্ষিত না হলে কখনও কোনও সমাজের ভাল হতে পারে না। মহিলা ক্ষমতায়নের বিষয়ে এখন কত আলোচনা হয়। কিন্তু ১৭৫ বছর আগে এমন আলোচনা করাও একটি বিষয়ের মধ্যে পড়ত। আর সেই সময়তেই নারীশিক্ষার বিষয়ে পথ দেখিয়েছিল বেথুন স্কুল।’’
নারীশিক্ষার ক্ষেত্রে বিদ্যাসাগরের ও সতীদাহ প্রথা অবলুপ্তিতে রাজা রামমোহন রায়ের ভূমিকার কথাও বলেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘বেথুন সাহেব, রামগোপাল ঘোষ, দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায়, মদনমোহন তর্কালঙ্কার, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরেরা যে উদ্দেশ্য নিয়ে বেথুন স্কুল শুরু করেছিলেন, তা অনেক দূর এগিয়েছে। কিন্তু অনেক পথ যেতে হবে। এই দহনে, অগ্নিবাণেও আপনারা অনেক উজ্জ্বল, আপনারা বিশ্বে প্রথম হবেন। সেই বিশ্বাসে এগিয়ে চলুন, জয় হবেই।’’
বেথুন স্কুল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদজ্ঞাপনও করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘আমাকে কথাগুলো বলতে দেওয়ার জন্য বেথুন স্কুল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ। আপনাদের এখানে পদার্পণ করে ধন্য হয়েছি।’’ একই সঙ্গে তিনি রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে বেথুন স্কুলের ১৭৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করার নির্দেশ দিয়েছেন।
রাজ্য সরকারের তরফে বেথুন স্কুলকে মুখ্যমন্ত্রী বঙ্গরত্ন পুরস্কার প্রদান করেন। প্রধানশিক্ষিকার হাতে সেই পুরস্কার তুলে দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের এই ছোট্ট দান। রাজ্য সরকারের বিশেষ গর্বের পুরস্কার হিসেবে আপনাদের দেওয়া হল।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘নারী জাগরণ না হলে সমাজ এগোতে পারে না। মেয়েরা যদি ঘরের দায়িত্ব নিতে পারে, তা হলে বাইরের দায়িত্ব কেন নিতে পারবে না?’’ এই অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ছাড়াও হাজির ছিলেন উত্তর কলকাতার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা।