তিন সিপিএম কর্মীর মুন্ডু চেয়ে পোস্টার পড়ল হাওড়ায়। শুধু তাই নয়, সেই কাজের জন্য নির্দিষ্ট সময়ও বেঁধে দেওয়া হল। নির্বাচনের ফল প্রকাশের আগেই এমন হুমকি পোস্টারে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে শাসক দলের দিকে। তৃণমূল যদিও সে অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা সিপিএমের দিকেই তা ঘুরিয়ে দিয়েছে।
খোদ দলনেত্রী আগেই হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন, ‘এ বার আর রবীন্দ্র সঙ্গীত বাজবে না’। পারিষদগণ তো আরও কয়েক গুণ বাড়িয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, ‘চড়াম চড়াম করে ঢাক বাজবে’। বিধানসভা নির্বাচনের ফল বেরোনোর পর শাসক দল ফের ক্ষমতায় এলে বিরোধীদের সঙ্গে কেমন ‘ব্যবহার’ করা হবে, তার একটা আভাস ইতিমধ্যেই তৃণমূলের নেতানেত্রীরা দিয়ে রেখেছেন। সেই তালিকায় এ বার ‘মুন্ডু চাই’ও ঢুকে পড়ল।
সোমবার গভীর রাতে হাওড়ার নেতাজি সুভাষ রোডে, শ্যামাশ্রী সিনেমা হলের সামনের একটি ক্লাবে ব্যাপক বোমাবাজি হয়। ঘটনার সময় স্থানীয় বাসিন্দারা কেউই আর রাতে ভয়ে বাইরে বেরোননি। সকালে দেখা যায়, ক্লাব-ঘরের দরজার গায়ে একটি পোস্টার সাঁটিয়ে রাখা হয়েছে। সেখানে লাল কালিতে জীবন বিশ্বাস, শ্যামল হাজরা এবং বাচ্চু মুদির নাম লেখা, তলায় কালো কালিতে লেখা, ‘এদের মুন্ডু চাই চাই চাই’। তারও নীচে লেখা রয়েছে, ‘তারিখ, ১৯/৫ থেকে ৩০/৫-এর মধ্যে’।
স্থানীয়দের দাবি, পোস্টারে যাঁদের নাম লেখা হয়েছে, সেই তিন জনই এলাকায় সিপিএম কর্মী হিসেবে পরিচিত। ওই এলাকা মধ্য হাওড়া বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। আগামী পরশু অর্থাত্ বৃহস্পতিবার রাজ্যে ২৯৪টি আসনের ফল বেরোবে। তার আগেই এমন হুমকি পোস্টারে এলাকার লোকজন রীতিমতো ভয় পেয়ে গিয়েছেন। সিপিএম কর্মী বাচ্চু মুদি সকাল বেলায় ওই পোস্টারে নিজের নাম দেখে একটু ঘাবড়ে গিয়েছেন। গোটা ঘটনার দায় তৃণমূলের উপরে চাপিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ভয় দেখানোর চেষ্টা চলছে। সাধারণ মানুষ এবং এলাকাবাসীকে ভীত সন্ত্রস্ত করার চেষ্টা করছে তৃণমূল।’’ এ বিষয়ে সিপিএমের তরফে ব্যাঁটরা থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে।
ঘটনা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল মধ্য হাওড়ার তৃণমূল প্রার্থী তথা হাওড়া জেলা তৃণমূলের সভাপতি অরূপ রায়। ঘটনার দায় অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘হাস্যকর ঘটনা। এটা জঙ্গলমহল নয় যে মুন্ডু চাইতে হবে। আমরা যা করি, প্রকাশ্যে করি। এমন চোরের মতো রাতের অন্ধকারে পোস্টার আমরা অন্তত লাগাই না।’’ তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘মধ্য হাওড়ায় একটা মারামারির ঘটনা পর্যন্ত ঘটে না, সেখানে ওই চুনোপুঁটিদের জন্য এমন পোস্টার লাগাতে যাবে কেন আমাদের কর্মীরা? ওরা নিজেদের গুরুত্ব বাড়ানোর জন্য, খবর তৈরি করার জন্য, নিজেরাই বোমা মেরে ওই পোস্টার লাগিয়েছে। আমরা তো শান্তি বজায় রাখার দিকে।’’
আরও পড়ুন-ফ্ল্যাটে শিশুপুত্রকে নিয়ে পুড়ে মরল মা, দেওয়ালে লেখা ‘স্বামীই দায়ী’