প্রতীকী ছবি
ব্যবসা থেকে লভ্যাংশ দেওয়া হবে বলে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে আধার ও প্যান কার্ডের মতো নথি নিত তারা। তার পরে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প গড়ার অছিলায় ওই ব্যক্তিদের নামে লক্ষাধিক টাকার ঋণ তুলে তা হাতিয়ে নিত চক্রটি। ঋণের নামে প্রতারণা, অর্থ নয়ছয়ের অভিযোগে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজারকে গ্রেফতার করা হল। অন্য জনকে আগেই ধরা হয়েছিল। তাদের জেরা করতেই জানা গেল এই তথ্য। ধৃত ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের নাম কুণাল ঘোষ। অন্য জনের নাম অভিজিৎ পাল।
এয়ারপোর্ট থানার তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ব্যাঙ্ক থেকে কমপক্ষে ৩৪ কোটি টাকা হাতানো হয়েছে। ম্যানেজারকে ধরে বুধবার ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হলে তাঁর দু’দিনের পুলিশি হেফাজত হয়। তদন্তকারী এক পুলিশ অফিসার মহেশ দাস এ দিন জানান, ওই ব্যাঙ্কের মধ্যমগ্রাম ও বিরাটি শাখা থেকে জালিয়াতি করে ৫০ বারের বেশি ঋণ নেওয়া হয়েছে।
জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছে, ব্যাঙ্কে আসা ব্যক্তিদের সঙ্গে ঋণ দেওয়ার নামে যোগাযোগ করত চক্রটি। বারাসতের কদম্বগাছির একটি কারখানা দেখিয়ে বলা হত, সেটির প্রাপ্ত আয়ের লভ্যাংশ থেকে এককালীন এক লক্ষ টাকা ও প্রতি মাসে টাকা দেওয়া হবে। তার পরে ওই ব্যক্তিদের থেকে নথি নিয়ে কাগজে সই করানো হত। এর পরে তৈরি হত ভুয়ো ট্রেড লাইসেন্স।
অন্য দিকে, ওই ব্যক্তিরাই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প গড়বে দেখিয়ে তাদের নামে ‘ক্যাশ ক্রেডিট’ ঋণ নেওয়া হত। টাকা মঞ্জুর হওয়া মাত্র ওই ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নেওয়া হত। বাইরের দিক সামলাত অভিজিৎ আর ব্যাঙ্কের অভ্যন্তরীণ বিষয় দেখতেন কুণাল। গত কয়েক বছরে কমপক্ষে ৫০টি অ্যাকাউন্ট থেকে এ ভাবে ঋণ গায়েব হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। প্রথমে ১ কোটি ৫৪ লক্ষ টাকার গরমিলের পরে কুণালকে এক বছর চার মাস সাসপেন্ড করা হয়। পরে মধ্যমগ্রাম থেকে তাঁকে বিরাটি শাখায় সরানো হয়। কিন্তু পুলিশ জানিয়েছে, অভিজিৎকে নিয়ে সেখানেও কয়েকটি প্রতারণা করে ওই চক্র। তার পরেই কুণালের নামে অভিযোগ দায়ের করে ব্যাঙ্ক।