তিনতলা বাড়ির ছাদের তিন দিকই খোলা। কোনও পাঁচিল নেই। সেখানে খেলতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে মৃত্যু হল চার বছরের এক শিশুর। মৃতের নাম পুষ্পক সাউ। বাড়ি মুরারিপুকুর রোডে।
পুলিশ জানায়, ওই বাড়িতে দুই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন পিন্টু সাউ। উল্টো দিকের তিনতলা বাড়িতে থাকেন পিন্টুর ভাই মিন্টু। রবিবার পিন্টুর বড় ছেলে পুষ্পক কাকার কাছে ছিল। পিন্টুর বাবা ভরতবাবু জানান, কাকার ছেলে ঋষভের সঙ্গে পুষ্পক ছাদে খেলছিল। হঠাৎ ঋষভের চিৎকারে মিন্টু ও তাঁর স্ত্রী এসে দেখেন, নীচে পড়ে পুষ্পকের নিথর দেহ। পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর একটি মামলা রুজু করেছে।
শোকার্ত পিন্টু বারবার বলছিলেন, ‘‘ছাদে পাঁচিল থাকলে এমন হতো না।’’ শুধু পাঁচিল নয়, তিনতলা থেকে ছাদে যাওয়ার সিঁড়ির দরজাও নেই। বাড়ির মালিক বিমল সাহা বলেন, ‘‘বছর চার আগে বাড়িটি তৈরি হয়েছে। পুরসভার অনুমতি নেওয়া হয়নি। এখানে বাড়ি তৈরিতে পুর-অনুমতি লাগে না।’’ আরও জানান, অসুস্থ থাকায় পাঁচিল তৈরি করতে পারেননি। ওই বাড়ির চার ভাড়াটে জানান, বহু বার মালিককে জানালেও কাজ হয়নি।
পুর-অনুমতি ছাড়াই ওই এলাকায় কী ভাবে নির্মাণের ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে? মানিকতলার বিধায়ক তথা ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডেরও প্রশ্ন, ‘‘বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে পুরসভা কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না?’’ স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর অমল চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘এলাকাটা পুরো কলোনি। পুর-অনুমতি ছাড়াই বাম আমলে বহু বেআইনি নির্মাণ হয়েছে। তা ভাঙতে মেয়র, পুর কমিশনার ও পুলিশকে বলেছিলাম। কিন্তু কাজ হয়নি।’’ মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই এলাকার অধিকাংশ বাড়ি বাম আমলে তৈরি। এগুলি কলোনি এলাকার বাড়ি। তা ছাড়া বাড়ির ছাদ খোলা থাকলে পুরসভা কী করবে? বাড়ির মালিককে জিজ্ঞাসা করুন।’’