রাত আটটা। শোভাবাজার থেকে উল্টোডাঙা যাওয়ার জন্য অটোতে উঠেছিলেন দুই যুবক। ভাড়া নেওয়ার কথা দশ টাকা। কিন্তু অটোতে ওঠার আগেই চালক সাফ বলে দিলেন, ‘‘১৫ টাকা দিতে পারলে, তবেই উঠুন।’’ চালকের যুক্তি, ‘‘ফেরার সময়ে যাত্রী কম হয়। সেটা তো পোষাতে হবে!’’
এমন ঘটলে বেলতলার মোটর ভেহিক্যাল্স দফতরে অভিযোগ জানাতে পারেন যাত্রীরা। ওই দুই যুবকও জানিয়েছিলেন। এক পরিবহণকর্তা ডেকে পাঠান ওই রুটের ইউনিয়ন নেতাকে। তিনি জানান, অভিযোগ ভিত্তিহীন। ওই কর্তার কথায়, ‘‘শাসক দলের ইউনিয়ন নেতাই যদি বলেন অভিযোগের ভিত্তি নেই, আমরা কী করব?’’
কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। অটোর দাদাগিরি রুখতে অভিযোগ জানানোর জায়গা হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, ‘‘অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ইউনিয়ন অভিযোগ উড়িয়ে দেয়।’’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় এসে অটো নিয়ে ভোগান্তি কমাতে একাধিক পদক্ষেপের আশ্বাস দেন। কমিটি হয়েছে, আছে হেল্পলাইন। কিছুই ফলপ্রসূ হয়নি। শুভেন্দু অধিকারী পরিবহণমন্ত্রী হয়ে পৃথক ‘অটো নীতি’ তৈরির কথাও ঘোষণা করেছেন।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, অটোর উপরে ইউনিয়নের খবরদারি না কমলে কি অটোকে আদৌ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে? পরিবহণকর্তারা বলছেন, অটো নীতিতে যা-ই হোক, ভাড়া নির্ধারণের দায়িত্ব থাকবে ইউনিয়নের উপরেই। বিষয়টি নিয়ে পরিবহণ অফিসারেরা স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন, এই যুক্তিতে মন্তব্য করতে চাননি তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভানেত্রী দোলা সেন। তিনি বলেন, ‘‘বেলাগাম অটোর জন্ম বাম আমলে। দীর্ঘ দিনের এই সমস্যা এত সহজে মিটবে না। আমরা অনেকটা নিয়মে আনার চেষ্টা করছি। তাই এখনও নতুন অটোর পারমিট দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের দল এবং প্রশাসন স্পষ্ট করে দিয়েছে, অটোর অনিয়ম মানা হবে না। এর পরেও পরিবহণকর্তারা কথা বলতে চাইলে বলতেই পারি।’’