প্রতি দিনের প্রতীক্ষা। ছবি: অরুণ লোধ।
গড়ে প্রায় কুড়ি মিনিট দাঁড়ালে এখানে অটো মেলে। আর সন্ধ্যা হলে অটো কার্যত উধাও হয়ে যায়। নিত্যদিন এই পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার সন্তোষপুর স্টেশন সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা ও নিত্যযাত্রীরা। সমস্যা মেটাতে প্রশাসন উদ্যোগী নয় বলে অভিযোগ তাঁদের।
সন্তোষপুর স্টেশন সংলগ্ন এলাকার যেখান থেকে বটতলা রেললাইন রুটের অটো ছাড়ে সেটি সন্তোষপুর তিন নম্বর লাইন বলে পরিচিত। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, প্রতি দিনই সকালে বটতলার দিকে যাওয়ার জন্য অটোর চাপ থাকে সন্তোষপুর স্টেশনের এই অটোস্ট্যান্ডে। সন্ধ্যা শুরু হয় সন্তোষপুর স্টেশনের দিকে আসার জন্য বটতলায় অটোযাত্রীর চাপ। বাসিন্দা থেকে যাত্রী সকলেরই অভিযোগ, সকালে সন্তোষপুর স্টেশনে এবং বিকেলে বটতলা রেললাইনে যাত্রীদের দীর্ঘ ক্ষণ অটোর জন্য অপেক্ষা করতে হয়। তা সত্ত্বেও অনেক সময়ই অটো মেলে না। তখন যাত্রীদের ভ্যানরিকশায় চেপে যাতায়াত করতে হয়।
ট্রেন থেকে নেমেই অটোর লাইনে দাঁড়াবার প্রতিযোগিতায় প্রতি দিন ছুটতে হয় যাত্রীদের। এঁদের বেশিরভাগেরই গন্তব্য তখন বটতলা রেললাইন। অথচ ওখানে যেতে অটো কিংবা ভ্যানরিকশা ছাড়া আর কোনও যান নেই। অটোর প্রতীক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা তনিমা খাতুন জানান, গরমে আর বর্ষায় অটোর জন্যে ঠায় দাঁড়াতে খুব কষ্ট হয়। একে তো কোনও ছাউনি নেই, তার উপরে অটো খুবই কম। আক্রা রোড সংলগ্ন বটতলার বাসিন্দা সামসেদ মোল্লা জানাচ্ছেন, অনেকেই ব্যবসার কাজে যাতায়াত করেন। সঙ্গে তাই জিনিসপত্রও থাকে। সেই সব নিয়ে বহু ক্ষণ অটোর লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
স্থানীয় অটো ইউনিয়নের সম্পাদক রবি মোল্লা অবশ্য সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করছেন। তাঁর দাবি, ‘‘এই রুটে প্রায় ৬০টি অটো নিয়মিত যাতায়াত করে। সকাল ছ’টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত অটো চলে এখানে। যাত্রীদের কোনও সমসস্যাই নেই।’’ রবিবাবুর কথার বিরোধিতা করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী থেকে নিত্যযাত্রী প্রত্যেকেই। তাঁদের কথায়, খাতায় কলমে অটো রাত ১০টা পর্যন্ত চলে ঠিকই, আদতে রাত বাড়লে অটো মেলে না। সন্ধ্যা সাতটার পর থেকে এই সমস্যার শুরু। তখন একমাত্র ভরসা ভ্যানরিকশা।
ভ্যানচালক শাহজাহান মোল্লার দাবি, ‘‘সন্ধ্যার পর থেকে অটোলাইনে হাতে গোনা কয়েকটা অটো থাকে। বাকি অটোগুলি চলে না।’’ এই রুটের কিছু অংশ পড়ে কলকাতা পুর এলাকায় এবং কিছুটা মহেশতলা পুর এলাকায়। কলকাতা পুর এলাকার স্থানীয় কাউন্সিলর বদরুদ্দোজা মোল্লা জানাচ্ছেন, কয়েক বছরে এলাকায় জনসংখ্যা অনেকখানি বেড়েছে। তুলনায় অটো বাড়েনি। তাই অটোর সমস্যা রয়েছে। তবে ব্যস্ত সময়ে এই ভাবে অটো তুলে যাত্রীদের সমস্যা তৈরি করা কখনওই উচিত নয়। একই বক্তব্য মহেশতলা
পুর-কর্তৃপক্ষেরও।