ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জন্য শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরের এখন লন্ডভন্ড অবস্থা। অনেক জায়গায় পর্যাপ্ত আলো নেই। রাতে হাঁটতে গিয়ে অসমান জায়গায় অনেকে পড়ে যাচ্ছেন। গোদের উপর বিষফোড়ার মতো এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ট্যাক্সি ও অটোর দৌরাত্ম্য। যাত্রীদের একটা বড় অংশের অভিযোগ, অধিকাংশ ট্যাক্সি শিয়ালদহের ভিতরে ঢুকতে চায় না। অনেক চালক সুযোগ পেলেই গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার জন্য দ্বিগুণ ভাড়া হাঁকেন। কেউ কেউ আবার সরাসরি যাত্রীদের মুখের উপরে না-ও বলে দেন।
এমতাবস্থায় যাত্রীদের সুবিধার্থে শিয়ালদহ স্টেশনের বাইরে খানিকটা জায়গা একটি বেসরকারি অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাকে দিতে চুক্তি করেছিল রেল। এর জন্য বছরে প্রায় ৬২ লক্ষ টাকা রেলকে জমাও দিয়েছিল ওই সংস্থা। কিন্তু অভিযোগ, স্টেশনের ট্যাক্সিচালকদের বাধায় অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাকে এখনও জমি দেওয়া যায়নি। ফলে থমকে গিয়েছে গোটা প্রক্রিয়াই। রেলের তরফে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
রেল সূত্রের খবর, ওই অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাকে কম-বেশি ২০০ স্কোয়ার মিটার এলাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নতুন বছরে যে দিন ওই এলাকা সংস্থাটির হাতে তুলে দেওয়ার কথা ছিল, সে দিনই স্টেশনে অপেক্ষারত অন্য ট্যাক্সির চালকেরা মিছিল বার করেন। তাঁদের হই-হল্লায় স্টেশন চত্বরে রীতিমতো বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। ফলে তখনকার মতো জমি হস্তান্তর বন্ধ করে দেওয়া হয়।
শিয়ালদহের রেলকর্তারা বলছেন, ‘‘এই ধরনের ব্যবস্থা হাওড়া স্টেশনেও করা হয়েছে। সেখানে কোনও অসুবিধাই হয়নি। কিন্তু জনবহুল এই স্টেশনে যাত্রীদের ওই সুযোগ দিতে যাওয়াতেই বিপত্তি ঘটল।’’ শিয়ালদহের ওই ট্যাক্সিচালকদের অধিকাংশই প্রোগ্রেসিভ ট্যাক্সি মেন্স ইউনিয়নের সদস্য। ওই সংগঠনের নেতা শম্ভুনাথ দে বলেন, ‘‘কলকাতা পুলিশের তরফে শিয়ালদহের ট্যাক্সি বুথ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ইউনিয়নের তরফে ওই অ্যাপ-ক্যাবের বিরোধিতা করা হয়নি। তবে স্থানীয় কয়েক জন ট্যাক্সিচালক অসুবিধা করতে পারেন। সেটা আমাদের জানা নেই।’’
যদিও ওই ট্যাক্সিচালকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন-এর নেতারা। ওই সংগঠনের নেতা বিমল গুহ বলেন, ‘‘অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাগুলি ইচ্ছে মতো ভাড়া নিচ্ছে, আমাদের পেটে লাথি মারছে। তার বেলা সরকার চুপ। যত খবরদারি আমাদের উপরে। আমাদেরই সামনে ওদের বুথ খোলার ব্যবস্থা হচ্ছে। আমরা প্রতিবাদ করবই।’’