ফাইল চিত্র
অবশেষে সল্টলেকে কঙ্কাল-কাণ্ডে গ্রেফতার করা হল অভিযোগকারীর কন্যা বৈদেহী মহেনসরিয়াকে। সম্প্রতি তাঁকে ঝাড়খণ্ড থেকে গ্রেফতার করে বিধাননগর পুলিশ।
১০ ডিসেম্বর সল্টলেকের এজে ব্লকের একটি বাড়ি থেকে একটি কঙ্কাল উদ্ধার হয়। তার আগে ওই বাড়ির গৃহকর্তা অনিলকুমার মহেনসরিয়া পুলিশকে অভিযোগে জানান, তাঁর বড় ছেলে অর্জুনের খোঁজ মিলছে না। সেই ঘটনায় খুন ও অপহরণের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় ওই বাড়ির গৃহকর্ত্রী গীতা এবং তাঁর সন্তান বিদুরকে। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট এবং প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ নিশ্চিত কঙ্কালটি যাঁর তাঁকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। সেই কঙ্কালটি নিখোঁজ অর্জুনের বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছেন তদন্তকারীরা। কিন্তু কেন এই খুন, সে সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশের অভিযোগ, অভিযুক্তেরা তদন্তে সহযোগিতা করছেন না। বরং বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। পুরো ঘটনাটির পরতে পরতে রয়েছে রহস্য। উপরন্তু তদন্তভার নেওয়ার পর থেকে গীতার মেয়ে বৈদেহীর কোনও খোঁজ মিলছিল না। ধৃত গীতাকে জিজ্ঞাসা করে পুলিশ জানতে পেরেছিল রাঁচীতে তাঁর আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলেন বৈদেহী। গীতা এবং বিদুর কলকাতায় ফিরে এলেও বৈদেহী ফেরেননি। পুলিশ খোঁজ করে সেখানে তাঁর খোঁজ পায়নি।
পুলিশ সূত্রের খবর, একটি বিশেষ দল রাঁচিতে যায়। সেখানে কয়েক দিন ধরে তল্লাশির পরে মোবাইল টাওয়ার লোকেশনের সূত্র ধরে একটি বাড়ি থেকে বৈদেহীকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, আত্মগোপন করেছিলেন তিনি। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে যে, হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সময়ে ঘটনাস্থলেই হাজির ছিলেন বৈদেহী। এফআইআরে অভিযুক্তের তালিকায় তাঁর নাম ছিল। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে রহস্যের জট অনেকটাই খুলে যাবে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
শুক্রবার বৈদেহীকে বিধাননগর আদালতে তোলা হলে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ হয়। এই মামলায় বিশেষ সরকারি আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় আদালতে দাবি করেন, এই হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষ ভাবে যোগ রয়েছে বৈদেহীর। কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল, কেন ঘটল, সে সম্পর্কে অনেক তথ্য তাঁর কাছ থেকে মিলতে পারে। কেন এত দিন তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন তা-ও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
যদিও পুলিশি হেফাজতের আবেদনের বিরোধিতা করে অভিযুক্তের আইনজীবী জাকির হোসেন জানান, পুলিশ এক এক বার এক এক রকম তথ্য পেশ করছে। তাঁর মক্কেল তদন্তে সম্পূর্ণ ভাবে সহযোগিতা করবেন। তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। তিনি তাঁর আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলেন। বৈদেহীর জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী।