Suspended OC

নিরপরাধ গ্রেফতার, ওসিকে সাসপেন্ডের নির্দেশ উচ্চ আদালতের

আদালত সূত্রের খবর, গত মার্চের শেষে বাগুইআটি থানার পুলিশ তপসিয়া এলাকা থেকে এক নাবালিকাকে উদ্ধার করে। তখন তার পালক মা-বাবার তরফে অভিযোগে জানানো হয়েছিল, মেয়েটিকে অপহরণ করেছেন এক যুবক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৩ ০৮:২৯
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

অপরাধীকে নাগালের মধ্যে পাওয়া না গেলেও নির্দোষ যেন কোনও শাস্তি না পান। আইনের সেই দর্শন লঙ্ঘনেরই অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে, বাগুইআটিতে এক নাবালিকাকে উদ্ধারের একটি ঘটনায়। যৌনপল্লি থেকে ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করেছিলেন যে যুবক, তাঁকেই গ্রেফতার করে জেলে পাঠিয়েছিল পুলিশ। এমনকি, এই ধরনের মামলায় সুপ্রিম কোর্ট নাবালিকার পরিচয় গোপন রাখার নির্দেশ দিলেও মামলার কেস ডায়েরিতে তার ছবি দিয়েছিল পুলিশ। উচ্চ আদালতের সামনে এমনই সব তথ্য উঠে আসায় বাগুইআটি থানার ওসি শান্তনু সরকার এবং ঘটনার তদন্তকারী অফিসারবিশ্বজিৎ দাসকে সাসপেন্ড করতে বিধাননগর কমিশনারেটকে নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। মঙ্গলবার এই নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ। ঘটনায় নড়ে বসেছেন কমিশনারেটের পদস্থ কর্তারা।

Advertisement

আদালত সূত্রের খবর, গত মার্চের শেষে বাগুইআটি থানার পুলিশ তপসিয়া এলাকা থেকে এক নাবালিকাকে উদ্ধার করে। তখন তার পালক মা-বাবার তরফে অভিযোগে জানানো হয়েছিল, মেয়েটিকে অপহরণ করেছেন এক যুবক। ওই যুবকের মোবাইলের অবস্থানের সূত্রে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে এবং মেয়েটিকে উদ্ধার করে।

ওই যুবকের আইনজীবী মজ়হার হোসেন চৌধুরীর দাবি, মামলার শুনানিতে পুলিশের কাছে সাক্ষীরা জানান, ওই নাবালিকার সঙ্গে যুবকটির মেলামেশা পছন্দ করছিলেন না মেয়েটির পরিজনেরা। সেই কারণে তাকে পরিবারের তরফেই জোর করে যৌনপল্লিতে নিয়ে গিয়ে যৌন ব্যবসায় নামানো হত। যুবকটি মেয়েটিকে উদ্ধার করে তপসিয়ায় রেখেছিলেন।

Advertisement

এ দিন মজ়হার বলেন, ‘‘আমার মক্কেলকে গ্রেফতারির দু’দিনের মাথায় ওই নাবালিকা গোপন জবানবন্দিতে জানায়, তাকে তার জন্মদাত্রী মা অভিযোগকারী পরিবারের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। ওই পরিবারের লোকজন মেয়েটিকে কলকাতার বাইরে নিয়ে গিয়ে যৌন ব্যবসায় নামাবে বলে শাসানি দিচ্ছিলেন।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘নাবালিকা এ-ও জানিয়েছে, ওই যুবক তাকে বলেছেন, দু’জনে বিয়ে করে ভিক্ষা করে খেলেও ওই পথে তিনি প্রেমিকাকে যেতে দেবেন না। অথচ, এর পরেও পুলিশ ওই যুবককে মুক্তি দিতে উদ্যোগী হয়নি। প্রায় ১০০ দিন তিনি জেলে ছিলেন।’’

আদালত সূত্রের খবর, গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ দিন পুলিশের কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ এনেছেন বিচারপতিরা। মজ়হার জানাচ্ছেন, এর আগে শুনানিতে মেয়েটির ছবি সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলার সময়ে বিচারপতিরা পুলিশি তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। জানিয়েছিলেন, ওই যুবককে বিনা কারণে আটকে রাখা হয়েছে। গত সপ্তাহে যুবক জামিন পান।

আদালত সূত্রের দাবি, ছবির বিষয়টি নিয়ে কথা বলার সময়েই বিচারপতিরা প্রশ্ন তুলেছিলেন, যুবকের গোপন জবানবন্দিতে তাঁর বিরুদ্ধে তরুণীকে যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দেওয়ার প্রমাণ না থাকা সত্ত্বেও পুলিশ কেন তাঁকে আটকে রাখল? তার পরেই ওই দুই পুলিশ আধিকারিককে সাসপেন্ডের নির্দেশ দেন তাঁরা। সরকারি কৌঁসুলি অবশ্য বিচারপতিদের অনুরোধ জানান, এত কড়া নির্দেশ না দিতে।

যদিও ঘটনাটি নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি পুলিশকর্তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement