ডেঙ্গি রোধে প্রথম অভিযানে খাদ্য ভবনে মিলল লার্ভা

নির্মীয়মাণ বাড়ির বেসমেন্টে থিকথিক করছে মশার লার্ভা। তার ঠিক পাশেই জমিতে অস্থায়ী ভাবে থাকছেন শ্রমিকেরা। শুধু বেসমেন্টই নয়, নতুন লিফ্‌ট তৈরির জায়গা, পার্কিং প্লেস, এসি প্লান্টের ঘর-সহ বিভিন্ন জায়গায় জমে আছে জল। সব জায়গাতেই রয়েছে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার জীবাণু বহনকারী মশার লার্ভা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:১৯
Share:

পুর অভিযানে মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ। বৃহস্পতিবার। — নিজস্ব চিত্র

নির্মীয়মাণ বাড়ির বেসমেন্টে থিকথিক করছে মশার লার্ভা। তার ঠিক পাশেই জমিতে অস্থায়ী ভাবে থাকছেন শ্রমিকেরা। শুধু বেসমেন্টই নয়, নতুন লিফ্‌ট তৈরির জায়গা, পার্কিং প্লেস, এসি প্লান্টের ঘর-সহ বিভিন্ন জায়গায় জমে আছে জল। সব জায়গাতেই রয়েছে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার জীবাণু বহনকারী মশার লার্ভা।

Advertisement

বৃহস্পতিবার এমন ছবি দেখা গেল খোদ কলকাতা শহরের মধ্যেই একটি সরকারি অফিসে। কলকাতা পুরসভার সদর দফতর থেকে মাত্র আধ কিলোমিটার দূরে খাদ্য ভবনে।

ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া রোধে কলকাতা পুর প্রশাসন অভিযান শুরু করেছে বৃহস্পতিবারই। আর এ দিনই খাদ্য ভবনে ওই দৃশ্য দেখে মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ ফোন করেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। ওই বাড়ির আনাচে-কানাচে জমে থাকা জলে যাতে মশার লার্ভা না থাকে, সেই বিষয়টি তাঁকে দেখার জন্য অনুরোধ জানান। অতীনবাবু বলেন, ‘‘খাদ্য ভবনের অনেক জায়গায় ম্যালেরিয়া এবং ডেঙ্গির মশার লার্ভা মিলেছে। কিছু কিছু জায়গায় জমে রয়েছে আবর্জনাও। আগেও এখানে পরিদর্শন করা হয়েছিল। তার চেয়ে অবস্থা এখন অপেক্ষাকৃত ভাল। তবে আরও ভাল ভাবে পরিষ্কার হওয়া দরকার। বিষয়টি খাদ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছি।’’ মেয়র পারিষদ আরও জানান, খাদ্য ভবনে কিউলেক্স, এডিস ইজিপ্টাই এবং অ্যানোফেলিস স্টিফেনসাই মশার লার্ভা পাওয়া গিয়েছে।

Advertisement

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, খাদ্য ভবনের ভিতরের চত্বরে চলছে বহুতল অফিস নির্মাণের কাজ। ভবনের ভিতরে বেসরকারি গাড়ি যেখানে রাখা থাকে, সেই জায়গায় স্তূপাকৃতি জঞ্জাল। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে থার্মোকলের জিনিস। মেয়র পারিষদ অতীনবাবু পুর স্বাস্থ্য দফতরের কর্মী-আধিকারিকদের নিয়ে প্রথমেই যান নির্মীয়মাণ ওই অফিসের বেসমেন্টে। দেখা যায়, জমে রয়েছে জল। তার পাশেই ঘুপচি একচিলতে জায়গায় তৈরি হয়েছে লিফ্‌ট বসানোর চেম্বার।

এই দৃশ্য দেখে ক্ষুব্ধ অতীনবাবু পুরকর্মীদের কাছে জানতে চান, খাদ্য ভবন কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে কোনও নোটিস দেওয়া হয়েছিল কি না। পুরকর্মীরা জানান, ডিসেম্বর মাসেই নোটিস দেওয়া হয়েছিল। এর পরে মেয়র পারিষদ ঘুরে দেখেন পুরনো বিল্ডিংয়ের পার্কিংয়ের জায়গা এবং এসি প্লান্টের ঘর। সেখানেও মেলে মশার লার্ভা। খাদ্য ভবনের ভিতরে এই চত্বরগুলি যাতে আরও পরিষ্কার রাখা হয়, সে ব্যাপারে ওই অফিসের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা পূর্ত দফতরের এক বাস্তুকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দেন অতীনবাবু।

পরে ঘটনাস্থলে এসে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এখানে কিছু কিছু জায়গায় আবর্জনা জমে রয়েছে ঠিকই। মশার লার্ভার ব্যাপারেও মেয়র পারিষদ আমাকে জানিয়েছেন। এক সপ্তাহের মধ্যেই ওই জায়গাগুলি সাফ করতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেব।’’ পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক জানান, নির্মীয়মাণ বাড়িতে কাজের জন্য জলের প্রয়োজন আছে। তবে তা যাতে জমিয়ে রাখা না হয় এবং জমানো আবর্জনাও যাতে সাফ করা হয়, সেই বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সংস্থাকে জানানো হয়েছে। ওই আধিকারিকের কথায়, খাদ্য ভবনের পুরনো বাড়ির বেসমেন্ট আগের চাইতে এখন অনেক পরিষ্কার। তবে কিছু কিছু জায়গায় সমস্যা রয়ে গিয়েছে। সেগুলি সমাধানে জোর দেওয়া হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement