পার্ক স্ট্রিটের ছায়া এ বার সল্টলেকে। রাতের শহরে ফের গাড়ির ভেতর গণধর্ষণের শিকার হলেন এক মহিলা। সোমবার সল্টলেক মহিলা থানায় এমনই এক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশের কাছে জমা দেওয়া অভিযোগকারিণীর বয়ান মনে পড়িয়ে দিচ্ছে পার্ক স্ট্রিট কাণ্ডকে। ২০১২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে পার্ক স্ট্রিটের একটি হোটেলের সামনে থেকে সুজেট নামে এক মহিলাকে গাড়িতে তোলে পাঁচ যুবক। চলন্ত গাড়িতে ধর্ষণ করে তাঁকে এক্সাইড মোড়ের কাছে ফেলে দেয় তারা।
এ বারও ঠিক একই রকম ভাবে অভিযোগকারিণী মহিলাকে গাড়ির ভেতর ধর্ষণ করে বৈশাখী মোড়ের কাছে ফেলে দেয় অভিযুক্তরা। তবে, পার্ক স্ট্রিট-কাণ্ডে ঘটনার তিন দিন পরে থানায় অভিযোগ জানালেও পুলিশ প্রথমে বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়নি বলে অভিযোগ করেছিলেন সুজেট। পরে বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হতেই নড়েচড়ে বসে লালবাজারের একাংশ। আর সল্টেলকের ক্ষেত্রে গোটা অভিযোগটাই খতিয়ে দেখছে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট।
কী অভিযোগ করেছেন ওই মহিলা?
পুলিশের কাছে লিখিত ভাবে তিনি জানিয়েছেন, রবিবার রাত ১১টা নাগাদ তিনি একটি ব্র্যান্ডেড চায়ের দোকানে যাবেন বলে পূর্ব কলকাতার একটি জায়গা থেকে ট্যাক্সিতে ওঠেন। কিন্তু, গন্তব্যে পৌঁছে তিনি দোকান চিনতে পারছিলেন না। এর পরে ভাড়া মিটিয়ে ট্যাক্সি ছেড়ে দিয়ে নিজেই দোকানের খোঁজ করছিলেন তিনি। সেই সময়েই একটা গাড়ি এসে তাঁর পাশে দাঁড়ায় বলে অভিযোগ। ওই গাড়ির আরোহীরা তাঁকে প্রশ্ন করায় তিনি তাঁদের জানান, একটি দোকান খুঁজে পাচ্ছেন না। তখন তারা তাঁকে ওই দোকানে পৌঁছে দেবে বলে গাড়িতে তুলে নেয়। এর পর তারা ওই মহিলাকে গাড়িতে করে ঘণ্টা চারেক সল্টলেকের বিভিন্ন জায়গায় ঘোরে। সেই সময়েই গাড়িতে থাকা চার জন তাঁর উপর অত্যাচার করে বলেও অভিযোগ।
এ দিন ভোরের দিকে ওই মহিলাকে বৈশাখী মোড়ের কাছে গাড়ি থেকে ফেলে দিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। সেই সময় এক ট্যাক্সিচালকের নজরে আসে ঘটনাটা। তিনি বিধাননগর নর্থ থানায় খবর দেন। মহিলার অভিযোগ পেয়ে পুলিশ সেক্টর ফাইভের বিভিন্ন জায়গায় বসানো সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে। মহিলার শারীরিক পরীক্ষাও করানো হয়েছে হাসপাতালে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। মহিলার বয়ান অনুযায়ী, অভিযুক্তদের স্কেচ আঁকাচ্ছেন গোয়েন্দারা।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, ওই মহিলাকে গাড়িতে করে তুলে সল্টলেকের বাইরে কোথাও নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। মহিলার কথায় তেমনটাই মনে হচ্ছে। তবে, তাঁর কথায় বেশ কিছু ধোঁয়াশাও রয়েছে বলে মনে করছে তদন্তকারীদের একাংশ। মহিলার মোবাইলের লোকেশনও খতিয়ে দেখছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন
গণধর্ষণের ভিডিও ভাইরাল, বিক্ষোভে উত্তাল গোটা ব্রাজিল