—প্রতীকী চিত্র।
নিখোঁজ হওয়ার পাঁচ দিন পরে গঙ্গা থেকে উদ্ধার হল হরিদেবপুরের বাসিন্দা গৌতম ঘোষের (৬২) দেহ। গত মঙ্গলবার পশ্চিম বন্দর থানা এলাকার নাজিরগঞ্জে গঙ্গার ঘাট থেকে একটি দেহ উদ্ধার হয়। বুধবার গৌতমের পরিবারের সদস্যদের ওই দেহের ছবি দেখানো হয়। কিন্তু পরিবারের তরফে তা শনাক্ত করা হয়নি। শুক্রবার এসএসকেএমের মর্গে পরিবারের সদস্যদের দেহটি দেখানো হয়। কিন্তু তাতেও পরিজনেরা নিশ্চিত হতে পারেননি। পুলিশের এক কর্তা জানান, শেষে এ দিন গৌতমের স্ত্রী ও মেয়েকে পশ্চিম বন্দর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দেহের সঙ্গে থাকা জামাকাপড় দেখানো হলে তাঁরা গৌতমকে শনাক্ত করেন। ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট থেকে পুলিশ জেনেছে, জলে ডুবেই মৃত্যু হয়েছে ওই প্রৌঢ়ের।
তবে রহস্য এখানেই শেষ হয়নি। বৃহস্পতিবার গৌতমের মোবাইলটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে একটি সুইসাইড নোট। তারই ভিত্তিতে ওই প্রৌঢ়ের ভাই-সহ এলাকার তিন প্রোমোটারের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছে প্রৌঢ়ের পরিবার।
পুলিশ জানিয়েছে, হরিদেবপুর থানার মতিলাল গুপ্ত রোডে সপরিবার ভাড়া থাকতেন গৌতম। গত রবিবার থেকে খোঁজ ছিল না তাঁর। গৌতমের মোবাইলে গত কয়েক দিন ধরে ফোন করলেও সেটি বেজে গিয়েছিল। শেষে টাওয়ার লোকেশন যাচাই করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, মোবাইলটি রয়েছে হরিদেবপুর থানারই কালীপদ মুখার্জি রোডে। ওই এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে একটি গাড়ির খোঁজ মেলে। বৃহস্পতিবার গাড়িটি থেকে উদ্ধার হয় গৌতমের মোবাইল, আংটি এবং ওই সুইসাইড নোট। গাড়িটিও তাঁরই বলে পুলিশ জানিয়েছে। তদন্তকারীরা জানান, ওই সুইসাইড নোটে চার জনকে দায়ী করেছেন প্রৌঢ়। তাঁদের মধ্যে তিন জন প্রোমোটার এবং এক জন গৌতমের ভাই।
পুলিশ জেনেছে, গৌতমেরা দুই ভাই ও দুই বোন। কালীপদ মুখার্জি রোডে ১০ কাঠা জমিতে তাঁদের একটি বাড়ি ছিল। আট বছর আগে সেই বাড়িটি প্রোমোটারকে দেন গৌতমেরা। কিন্তু অভিযোগ, ওই নির্মীয়মাণ আবাসনে যে ফ্ল্যাট বা টাকা পাওয়ার কথা ছিল গৌতমের, তা তিনি পাননি। সেই কারণে চুক্তিপত্রে সই করেননি। অভিযোগ, সই করার জন্য গৌতমকে চাপ দেওয়া হচ্ছিল।