একই দিনে দু’-দু’টি মিছিলের জেরে সোমবার দুপুরে বেশ কিছুক্ষণ থমকে রইল শহরের ব্যস্ত রাজপথ। মধ্য কলকাতার বড় অংশে দুর্ভোগে পড়লেন মানুষ। সেই সঙ্গেই আবার প্রশ্ন উঠে গেল, একই দিনে শহরে একাধিক মিছিলের অনুমতি মেলে কী ভাবে? অভিযোগ, শহরে প্রায় নিয়মিতই ঘটছে এমন একাধিক মিছিলের ঘনঘটা। আর তার জেরে তীব্র যানজটের খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
পুলিশ জানায়, এ দিন সাড়ে বারোটা নাগাদ শ্যামবাজার থেকে কলেজ স্কোয়ার পর্যন্ত মিছিল ছিল এবিভিপি-র। আড়াইটে নাগাদ তা শেষ হওয়ার পরে কলেজ স্কোয়ারে কিছুক্ষণ জমায়েতও করেন মিছিলের সদস্যরা। প্রায় একই সময়ে কলেজ স্কোয়ার থেকে ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেল পর্যন্ত মিছিল করে আসেন বেআইনি অর্থলগ্নি কাণ্ডে প্রতারিতেরা।
ফলে এই সময়টায় যান চলাচল কার্যত বন্ধ হয়ে যায় কলেজ স্ট্রিট, এস এন ব্যানার্জি রোড, লেনিন সরণি, মৌলালি, সিআইটি রোড, রফি আহমেদ কিদওয়াই রোডে। থমকে ছিল চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউও। এন্টালির বাসিন্দা সৌম্যজ্যোতি আচার্য জানান, বিকেল পাঁচটায় হাওড়া থেকে ট্রেন ছিল তাঁর। আধ ঘণ্টার রাস্তা এ দিন ঘণ্টা দুয়েক লেগেছে যানজটে আটকে পড়ার কারণে। আটকে পড়েছিল বহু স্কুলবাসও।
এবিভিপি-র রাজ্য সহ-সভাপতি সুবীর হালদার জানিয়েছেন, তাঁরা শুক্রবার অর্থাৎ দশ তারিখ মিছিল করার অনুমতি চেয়েছিলেন পুলিশের কাছে। বদলে অনুমতি মেলে সোমবার মিছিল করার। অথচ এ দিন আগেই ঠিক ছিল বেআইনি অর্থলগ্নি কাণ্ডে প্রতারিতদের মিছিলটির। এবিভিপি-র প্রায় শ’দুয়েক সমর্থক মিছিল নিয়ে শ্যামবাজার থেকে কলেজ স্কোয়ার যাওয়ার সময়েই পথে নামেন অর্থলগ্নি কাণ্ডে প্রতারিতেরা।
কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সদর) সুপ্রতিম সরকার জানান, মিছিলকারীদের জমায়েত-স্থল আলাদা হলে কখনও একাধিক মিছিলের অনুমতি দিয়ে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘‘অনেক সময়ই সংগঠকদের নির্দিষ্ট দিনে মিছিল করার বাধ্যবাধকতা থাকে। তা সত্ত্বেও বহু ক্ষেত্রেই তো এমন হয়, নির্দিষ্ট দিনের বদলে অন্য দিন অনুমতি দেওয়া হয় যানজটের দিকটি মাথায় রেখেই।’’
কিন্তু পুলিশের এই বিবেচনার পরেও তো সভা-মিছিল-যানজটের অসুখে নিত্য ভুগছে মহানগর। সোমবার ছিল তেমনই একটি দিন। লালবাজারের ট্র্যাফিক বিভাগের এক কর্তা বলেন, ‘‘এ দিন শহরের সর্বত্র যান চলাচল স্বাভাবিক হতে হতে বিকেল পাঁচটা বেজে যায়।’’