বাবা মারা গিয়েছেন ২০০৯ সালে। কিন্তু তার পরেও তথ্য গোপন করে তাঁর পেনশন হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল ছেলের বিরুদ্ধে। রবিবার কাশীপুর থানায় এমনই অভিযোগ দায়ের করেছে রাজ্য অর্থ দফতরের অধীনস্থ ‘পেনশনার্স ডিসবার্সমেন্ট সেল’। পুলিশ জানায়, অভিযুক্তের নাম অনিন্দ্য দাসরায়। বাড়ি ডানলপে। অভিযোগ, তাঁর বাবা বিপদবরণ দাসরায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্মী ছিলেন। ২০০৯-এ তিনি মারা গেলেও তাঁর নামে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত পেনশন উঠেছে। সব মিলিয়ে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা হাতানো হয়েছে বলে অভিযোগ। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
কিছু দিন আগে এমনই একটি ঘটনা দেখা গিয়েছিল বেহালায়। শুভব্রত মজুমদার নামে এক যুবক মায়ের মৃতদেহ ফ্রিজারের মধ্যে তিন বছর ধরে সংরক্ষণ করেছিলেন। এবং মায়ের নামে নিয়মিত পেনশনও তুলেছিলেন। সেই ঘটনাতেও শুভব্রতের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ব্যাঙ্ক-কর্তৃপক্ষ।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত বছরের ডিসেম্বরে অর্থ দফতরের পেনশন সংক্রান্ত শাখা খবর পায়, বিপদবরণ দাসরায়ের নামে ভুয়ো নথি দিয়ে পেনশন তোলা হচ্ছে। তার পরেই ওই শাখার কর্মীরা বিপদবরণবাবুর বাড়িতে চিঠি দিয়ে জানায়, সব নথি নিয়ে ওই বৃদ্ধকে সশরীরে পেনশন সংক্রান্ত শাখার দফতরে হাজিরা দিতে হবে। ওই চিঠি দেওয়ার পর থেকেই বিপদবরণবাবুর পেনশন তোলা বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ জানায়, বিপদবরণবাবুর তরফে কেউ কোনও যোগাযোগ না করায় চলতি বছরের গোড়া থেকেই পেনশন সংক্রান্ত শাখার অফিসারেরা বিষয়টি
নিয়ে তদন্ত শুরু করেন। সেই তদন্তে তাঁরা জানতে পারেন, ভুয়ো নথি দিয়ে পেনশন তোলার ঘটনাটি সত্যি। তার পরেই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়।
পুলিশ ও পেনশন অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, পেনশনপ্রাপকদের প্রতি বছর ব্যাঙ্কে গিয়ে ‘লাইফ সার্টিফিকেট’ জমা দিতে হয়। সেই সার্টিফিকেটে কারসাজি করেই খাতায়-কলমে বিপদবরণবাবুকে ‘বাঁচিয়ে’ রাখা হয়েছিল। তবে এ ক্ষেত্রে যে ব্যাঙ্ক থেকে বিপদবরণবাবুর ছেলে অনিন্দ্য পেনশন তুলতেন বলে অভিযোগ, তাকেও কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে। পুলিশের একাংশের বক্তব্য, ওই ব্যাঙ্কের কর্মীদের সাহায্য না পেলে অনিন্দ্য এই কাজ এত বছর ধরে করতে পারতেন না।