—প্রতীকী ছবি।
ভাড়ায় যথেচ্ছ ‘সার্জ’ এবং চালকদের প্রাপ্য থেকে মোটা কমিশন কেটে নেওয়ার মতো সমস্যার সুরাহার আশ্বাস দিয়ে শুরু হয়েছিল সরকারি অ্যাপ-ক্যাব পরিষেবা ‘যাত্রী সাথী’। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে উদ্বোধনের মাসখানেকের মধ্যেই প্রত্যাশা মেটাতে গিয়ে হোঁচট খাচ্ছে সেই পরিষেবা। অভিযোগ এমনটাই। শহরের নির্দিষ্ট কিছু ব্যস্ত এলাকা ছাড়া অন্যত্র প্রয়োজনের সময়ে সরকারি ওই অ্যাপে গাড়ি মিলছে না বলে অভিযোগ।
একই ভাবে চালকদের অভিযোগ, একটু দূরের জায়গা থেকে অনলাইনে বুকিং নেওয়ার পরে ক্যাব নিয়ে পৌঁছতে সামান্য দেরি হলেই যাত্রীরা সেই বুকিং অন্তিম মুহূর্তে বাতিল করে দিচ্ছেন। গাড়ির তেল পুড়িয়ে যাত্রীর কাছে পৌঁছেও ভাড়া মিলছে না। কারণ, বুকিং বাতিলের ক্ষেত্রে যাত্রীকে জরিমানা করার কোনও ব্যবস্থাই নেই নতুন অ্যাপে। সমস্যা হচ্ছে বিমানবন্দর এলাকাতেও। অ্যাপের বুকিং প্রক্রিয়ায় বিমানবন্দর এলাকার মধ্যে প্রবেশের জন্য নির্দিষ্ট পার্কিং-ফি যুক্ত হওয়ার ব্যবস্থা না থাকায় সরকারি অ্যাপের অধিকাংশ ক্যাবচালকই কলকাতা বিমানবন্দর এড়িয়ে চলছেন বলে খবর। পরিবর্তে তাঁরা বাইরে থেকে যাত্রী তোলার পথে হাঁটছেন। এমনই নানা জটিলতায় গুরুত্ব হারাচ্ছে সরকারি অ্যাপ। এই অভিযোগ অনেকেরই। একাধিক বেসরকারি সংস্থার অ্যাপের মতোই সরকারি অ্যাপেরও কোনও অফিস না থাকায় বিভিন্ন সমস্যা মেটানোর জন্য যোগাযোগ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন যাত্রীদের পাশাপাশি চালকেরাও।
বৃহস্পতিবার ‘যাত্রী সাথী’র সমস্যা ছাড়াও বেসরকারি অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাগুলির চড়া হারে কমিশন আদায়, চালকদের যথেচ্ছ আইডি ব্লক এবং রাস্তায় ‘পুলিশি হয়রানি’-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে পরিবহণ ভবন অভিযানের ডাক দিয়েছিল সিটু-নিয়ন্ত্রিত অ্যাপ-ক্যাব চালকদের সংগঠনের সদস্যেরা। এ দিন কালীঘাট, এন্টালি এবং উল্টোডাঙা থেকে একযোগে কয়েকশো অ্যাপ-ক্যাব এবং বাইক-ট্যাক্সির মিছিলের জেরে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে দুপুরের দিকে প্রবল যানজট তৈরি হয়। পরে পুলিশ এবং পরিবহণ দফতর বাম সংগঠনের দাবিদাওয়া বিবেচনার আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে। এ দিন সিটু-র অ্যাপ-ক্যাব চালক সংগঠনের সভাপতি ইন্দ্রজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘সরকারি অ্যাপের সমস্যা মেটানো ছাড়াও অ্যাপ-বাইকগুলিকে দ্রুত বাণিজ্যিক লাইসেন্স প্রদান এবং রাস্তায় পুলিশি হয়রানি বন্ধের দাবি জানিয়েছি। পুলিশ এবং পরিবহণ দফতর সেই দাবি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।’’
এ দিন অপর বাম সংগঠন এআইটিইউসি-র ট্যাক্সি এবং অ্যাপ-ক্যাব চালক সংগঠনের নেতা নওলকিশোর শ্রীবাস্তব ও ‘লাক্সারি ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন’-এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তন্ময় কুণ্ডু জানান, সরকারি অ্যাপ নিয়ে তৎপরতা বাড়ানো প্রয়োজন।