PHD Scam

‘দাম’ ৭০ হাজার টাকা! চাকরি বিক্রির অভিযোগের পর এ বার পিএইচডির আসন বিক্রির অভিযোগ

এ বার পিএইচ ডি-র আসন বিক্রির অভিযোগ। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ম্যানেজমেন্টে পিএইচ ডি-র আসন এক যুবক ও তাঁর স্ত্রীকে পাইয়ে দেওয়ার নামে এক লক্ষ ৪০ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে।

নীলোৎপল বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৩ ০৬:২৬
Share:
A Photograph of Vidyasagar University

অভিযোগ: বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচ ডি-র আসন দেওয়ার নামে এক যুবক এবং তাঁর স্ত্রীর থেকে এক লক্ষ ৪০ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। ফাইল ছবি।

শিক্ষা ক্ষেত্রে চাকরি বিক্রির অভিযোগের পরে এ বার পিএইচ ডি-র আসন বিক্রির অভিযোগ। কলকাতার এক বাসিন্দার দাবি, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ম্যানেজমেন্টে পিএইচ ডি-র আসন তাঁকে ও তাঁর স্ত্রীকে পাইয়ে দেওয়ার নামে এক লক্ষ ৪০ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। বুধবার এফআইআর রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে সিঁথি থানা।

টালার বাসিন্দা ওই ব্যক্তি, শুভঙ্কর মান্না পুলিশকে জানান, কলকাতার একটি প্রতিষ্ঠা‌ন থেকে ২০০৮ সালে এমবিএ করেন তিনি। সেখানে পড়াতেন মণিগ্রীব বাগ নামে এক ব্যক্তি। পাশ করে বেরোনোর পরেও ওই শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল তাঁর। মণিগ্রীবই এক দিন জানতে চান, শুভঙ্কর পিএইচ ডি করতে ইচ্ছুক কি না। অভিযোগ, এর পরে তিনি পিন্টু রানা নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে শুভঙ্করকে যোগাযোগ করতে বলেন। বলা হয়, পিন্টু ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই কর্মী। শুভঙ্কর বলেন, ‘‘মণিগ্রীব স্যর বলায় সন্দেহ হয়নি। স্যরও ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই পিএইচ ডি করেছেন বলে জানান। প্রথমে অল্প কিছু টাকা পিন্টুকে পাঠাতে বলা হয়। এর পরে কয়েক দফায় প্রায় ৭০ হাজার টাকা দিই।’’

শুভঙ্করের দাবি, ‘‘স্যর আমাকে নিজের ফ্ল্যাটে ডেকে একটি রসিদ দেন। তাতে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্যাম্প ছিল। কিন্তু স্ট্যাম্পের সঙ্গে কাদের সই, তার উল্লেখ ছিল না।’’ এর পরে ওই শিক্ষক ফের শুভঙ্করের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বিদ্যাসাগরে ম্যানেজমেন্ট বিভাগে তফসিলিদের জন্য সংরক্ষিত একটি ফাঁকা আসনে শুভঙ্কর স্ত্রীকে ঢোকাতে চান কি না, জানতে চান। তার জন্য পিন্টুকে আরও ৭০ হাজার টাকা দিতে হয়। শুভঙ্করের কথায়, ‘‘সেই টাকার রসিদ দেওয়া হচ্ছিল না। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে জানতে পারি, পিন্টু রানা নামে কোনও কর্মীই নেই। মণিগ্রীব স্যরেরও কোনও যোগাযোগ নেই ওদের সঙ্গে।’’

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার জয়ন্তকিশোর নন্দী বলেন, ‘‘ওই নামে আমাদের কোনও কর্মী নেই।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচ ডি বিভাগের কর্মী রাজেশ কর্মকার বলেন, ‘‘এখানে পিএইচ ডি-তে ভর্তির সময়ে দিতে হয় ১০,১০০ টাকা। কোর্সওয়ার্কের জন্য আট হাজার। থিসিস জমার সময়ে আরও ১৭ হাজার। মানে ৩৫ হাজার মতো।’’

পিন্টু ফোনে বলেন, ‘‘আসন বিক্রির সঙ্গে যুক্ত নই। আমাকে টাকা পাঠানো হয়েছিল। তা যেখানে দেওয়ার কথা, দিয়েছি।’’ কাকে দিলেন? আপনাকেই বা কেন টাকা পাঠানো হল? পিন্টুর উত্তর, ‘‘যাকে দেওয়ার দিয়েছি। অত কথা বলতে যাব না।’’ এর পরে ফোন কেটে দেন তিনি। আর ফোনে তাঁকে পাওয়া যায়নি। মণিগ্রীবকে ফোনে ধরা হলে বলেন, ‘‘আমি এ সবে যুক্ত নই। আমারই পিএইচ ডি করা নেই।’’ ভুয়ো পিএইচ ডি নিয়ে জোর দিতেই দাবি করেন, ‘‘আসলে আমি এখনও অ্যাওয়ার্ডেড হইনি। আমার কাজকর্ম এখনও জমা করা হয়নি।’’ পিন্টু রানাকে চেনেন? মণিগ্রীবের উত্তর, ‘‘আমার এক ছাত্র ছিল। কিন্তু সে তো বহু দিন আগের কথা। ওই ছাত্রই এই ছাত্র কি না, বলতে পারব না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন