হাসপাতালে শমেট। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
সুস্থ হয়ে প্রথমেই তিনি বিয়ার খেতে চেয়েছেন। চেয়েছেন সিগারেটও। কিন্তু সবিনয়ে তাঁকে জানানো হয়েছে, কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি থাকা কোনও রোগীকে এ ভাবে বিয়ার বা সিগারেট খেতে দেওয়া সম্ভব নয়।
অথচ মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগেই ৫৯ বছর বয়সি ওই ফরাসি নাগরিক শমেট দিদিয়ারকে নিয়ে কালঘাম ছুটে গিয়েছিল চিকিৎসকদের। তিনি বাঁচবেন কি না, তা নিয়েই দেখা দিয়েছিল সংশয়। তাইল্যান্ডে ফরাসি দূতাবাসের ওই অফিসার ইস্তানবুল থেকে ব্যাঙ্কক যাচ্ছিলেন। কিন্তু তুরস্কের বিমান যখন মাঝআকাশে কলকাতার এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-এর আওতায়, তখন পাইলট জানান শমেট অজ্ঞান হয়ে গিয়েছেন। তাঁকে নিয়ে জরুরি অবতরণ করতে চান কলকাতা বিমানবন্দরে।
শমেটকে নিয়ে বিমান কলকাতায় নামার পরে অ্যাম্বুল্যান্স যখন কাছেই চার্নক হাসপাতালে পৌঁছয়, তখন ওই অফিসারের অবস্থা এতই খারাপ ছিল যে প্রাথমিক ভাবে তাঁকে ভেন্টিলেশনে দেওয়ার কথাও ভেবেছিলেন চিকিৎসকেরা। সে কারণে হাসপাতালের পক্ষ থেকে তড়িঘড়ি যোগাযোগ করা হয় কলকাতায় ফরাসি দূতাবাসের সঙ্গে। শমেটের শারীরিক অবস্থা একটু ভাল হলে তাঁকে বাই-প্যাপ দেওয়া হয়। জানা যায়, আগে থেকেই হাইপারটেনশন ছিল শমেটের। রক্তচাপও ছিল বেশি।
আইসিসিইউ-তে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পরেই অনেকটা সুস্থ হয়ে ওঠেন শমেট। তখনই বিয়ার ও সিগারেটের জন্য আবদার জুড়ে দেন। তাঁকে বোঝানো হয়েছে। আইসিসিইউ থেকেই তিনি সরাসরি বাড়ি চলে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেটাও সম্ভব হয়নি। বুধবার সকালে শমেটকে আলাদা কেবিনে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পর থেকে তিনি অবশ্য মত বদলে হাসপাতালে আরও ১০ দিন থেকে যাবেন বলে অনুরোধ করেছেন। হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, চিকিৎসকেরা যখন মনে করবেন, তখনই ছেড়ে দেওয়া হবে শমেটকে। ফোনে তিনি ফ্রান্সে এক আত্মীয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন। তবে এখনও পর্যন্ত কেউ কলকাতায় এসে পৌঁছননি।