জট কাটিয়ে চলছে নয়া সেতুর কাজ

নতুন সেতু তৈরির জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক বছরের সময়সীমা বেঁধে দিলেও সেতুর নকশা নিয়ে বেশ কিছুটা সময় নষ্ট হয়েছিল বলে সরকারি সূত্রের দাবি। কারণ, পাশে মেট্রো প্রকল্প থাকায় সেতুর নকশা নিয়ে মেট্রো কর্তৃপক্ষ এবং পূর্ত দফতরের মধ্যে টানাপড়েন চলছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৯ ০১:৪২
Share:

জোরকদমে: চলছে মাঝেরহাট সেতুর কাজ। শনিবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী

জট কেটে যাওয়ায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই শহরবাসীর জন্য খুলে দেওয়া হতে পারে মাঝেরহাটের নতুন সেতু। গত বছর পুরনো সেতুটি ভেঙে পড়ার পরে নতুন করে প্রায় ৮০০ মিটার দীর্ঘ একটি সেতু তৈরির কাজ চলছে গত সাত মাস ধরে। পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, বিদ্যাসাগর সেতুর মতোই চার লেনের ওই ঝুলন্ত সেতুটি তৈরি করতে মোট খরচ হতে পারে ২০০ কোটি টাকা।

Advertisement

নতুন সেতু তৈরির জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক বছরের সময়সীমা বেঁধে দিলেও সেতুর নকশা নিয়ে বেশ কিছুটা সময় নষ্ট হয়েছিল বলে সরকারি সূত্রের দাবি। কারণ, পাশে মেট্রো প্রকল্প থাকায় সেতুর নকশা নিয়ে মেট্রো কর্তৃপক্ষ এবং পূর্ত দফতরের মধ্যে টানাপড়েন চলছিল। শেষে মুখ্যসচিব মলয় দে-র হস্তক্ষেপে জট কাটে। সব প্রক্রিয়া শেষ করে কার্যত চলতি বছর থেকে শুরু হয়েছে নয়া নির্মাণের কাজ।

গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর ভেঙে পড়ে মাঝেরহাট সেতুর মধ্যবর্তী অংশ। ওই ঘটনায় মৃত্যু হয় চার জনের। সেতুটির পাশেই চলছিল জোকা-বি বা দী বাগ মেট্রো রেলের কাজ। মৃতদের তালিকায় ছিলেন তিন জন শ্রমিকও। মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার পরে বেহালা ও ঠাকুরপুকুর কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় মূল শহর থেকে। ওই বিপর্যয়ের জেরে দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন অংশে তৈরি হচ্ছিল প্রবল যানজট। সেই যন্ত্রণা থেকে শহরবাসীকে রেহাই দিতে একাধিক বিকল্প রাস্তা তৈরি করে কলকাতা পুলিশ। আলিপুর এবং নিউ আলিপুরের মধ্যে তৈরি করা হয় বেলি ব্রিজ। তাতেও বেহালা বা ঠাকুরপুকুরবাসী যানজটের হাত থেকে রেহাই পাননি। এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, এক বছরের মধ্যে তৈরি করা হবে মাঝেরহাট সেতু। সেই মতো দরপত্র ডাকা হয়। পঞ্জাবের একটি সংস্থা সেতু তৈরির দায়িত্ব পায়।

Advertisement

শনিবার দুপুরে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নতুন সেতুর ১৬টি স্তম্ভের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। তিনটি বাদে বাকিগুলির পাইলিংয়ের কাজও শেষ বলে জানালেন কর্মীরা। একই সঙ্গে পিয়ের ক্যাপের কাজও শেষের মুখে। এক অফিসার জানান, সেতুর মাঝের অংশের নীচে রয়েছে রেললাইন। রেলের প্রায় ২০০ মিটার অংশের কাজ সামনের মাসে শুরু হবে। মূলত রাতের দিকে সেই কাজ হওয়ার কথা। এর জন্য রেলের সঙ্গে কথা হয়েছে বলে সূত্রের দাবি।

পুলিশ জানিয়েছে, মাঝেরহাট সেতু বিপর্যয়ের পরে বিভিন্ন বিকল্প রাস্তা তৈরি করা হলেও দক্ষিণ শহরতলির ভোগান্তি কমেনি। বাস চলছে অনেকটা ঘুরপথে। এ ছাড়া, বেলি ব্রিজে রেলের লেভেল ক্রসিং থাকায় ট্রেন চলাচলের জন্য ব্যাহত হচ্ছে যানবাহনের গতি। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ওই সেতু চালু হলে আগামী বছরের পুজোর সময়ে দুর্ভোগের হাত থেকে রেহাই মিলবে।’’

পূর্ত দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘যে গতিতে কাজ চলছে, তাতে সেতু তৈরির পরে তার ভার এবং শক্তি পরীক্ষা করে আগামী মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া যাবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement