Online Admission

খুদেদের ভর্তি প্রক্রিয়াও এ বার অনলাইনে

সাউথ পয়েন্ট স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে স্কুলে ডেকে ইন্টারভিউ নেওয়া সম্ভব নয়।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০২০ ০২:১১
Share:

প্রতীকী ছবি।

করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে কলেজে ভর্তির আবেদন থেকে শুরু করে গোটা ভর্তি প্রক্রিয়াটাই এ বছর অনলাইনে হচ্ছে। খুদে পড়ুয়াদের ক্ষেত্রেও বেশি ভাগই স্কুলই এ বার ভর্তি নিচ্ছে অনলাইনে। অর্থাৎ, কলেজই হোক বা প্লে-গ্রুপ— ভর্তির ক্ষেত্রে এ বছর অনলাইন ছাড়া গতি নেই। যারা খুব ছোট, অর্থাৎ আড়াই-তিন বছরের শিশুদের ক্ষেত্রে মা-বাবাদেরই অনলাইন ইন্টারভিউ নেবে স্কুল।

Advertisement

সাউথ পয়েন্ট স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে স্কুলে ডেকে ইন্টারভিউ নেওয়া সম্ভব নয়। ওই স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণ দামানি বললেন, “আমাদের স্কুলে নার্সারিতে ভর্তির সময়ে খুব ভিড় হয়। এ বার যা পরিস্থিতি, তাতে সেই ঝুঁকি আমরা নিচ্ছি না। মা-বাবাদের ইন্টারভিউ নেওয়া থেকে শুরু করে বাচ্চাদের কিছু প্রশ্ন করা— পুরোটাই অনলাইনে হচ্ছে।”

কেমন হচ্ছে অনলাইন ইন্টারভিউ? ডোভার লেনের বাসিন্দা কমলিকা মুখোপাধ্যায় ছেলেকে সাউথ পয়েন্টে ভর্তির জন্য সোমবারই অনলাইন ইন্টারভিউ দিয়েছেন। কমলিকা বললেন, “বেশ নতুন ধরনের অভিজ্ঞতা। ওঁরা স্ক্রিনে একটা বেলুন আর একটা আপেল দেখিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, সেগুলো কী? ছেলে ঠিকমতোই উত্তর দিতে পেরেছে।” কমলিকা জানান, অনেক আগেই তাঁদের ইন্টারভিউয়ের তারিখ, সময় ও লিঙ্ক পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই মতো ওই লিঙ্ক খুলে তিনি ও তাঁর স্বামী স্বচ্ছন্দেই ইন্টারভিউ দিয়েছেন।

Advertisement

শ্রীশিক্ষায়তনের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্য জানালেন, তাঁদের স্কুলে নার্সারিতে ভর্তির পুরো প্রক্রিয়াটাই অনলাইনে হচ্ছে। ব্রততীর মতে, অনলাইনে ভর্তি নেওয়া অনেক বেশি সহজ। তিনি বললেন, “হয়তো দেখা গেল, শিশুটির বাবা কর্মসূত্রে দিল্লিতে থাকেন। স্কুলে ডেকে ইন্টারভিউ নিলে মা-বাবা একসঙ্গে আসতে পারবেন না। অনলাইনে কিন্তু দু’জনকে একসঙ্গে পাওয়া সম্ভব।” ব্রততী জানান, তাঁরা যখন স্কুলে ডেকে ইন্টারভিউ নেন, তখন মূলত মা-বাবার সঙ্গেই কথা বলেন। অনলাইনেও তা-ই করা হচ্ছে। খুদে পড়ুয়াদের খুব বেশি হলে হয়তো নামটা জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে।

তবে লা মার্টিনিয়ার স্কুলের তরফে সচিব সু্প্রিয় ধর জানালেন, তাঁরা অনলাইনে ভর্তির পক্ষপাতী নন। তিনি বললেন, “স্বাস্থ্য-বিধি মেনে স্কুলে ডেকে ইন্টারভিউয়েরই পক্ষপাতী আমরা। অন্যান্য বছর এক-এক দিনে যত জন অভিভাবককে ডাকা হয়, এ বার তার চেয়ে অনেক কম জনকে ডাকা হচ্ছে। এত ছোট ছোট বাচ্চা ও তাদের মা-বাবাদের নিয়ে অনলাইন ইন্টারভিউয়ে নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে। এ বার আমাদের ভর্তি প্রক্রিয়া দীর্ঘ হবে হয়তো, কিন্তু ইন্টারভিউ স্কুলে ডেকেই হবে।”

ডিপিএস নর্থ কলকাতার প্রিন্সিপাল সুজাতা চট্টোপাধ্যায় বললেন, “অনলাইনে ফর্ম তো দেওয়া হয়েছেই। আমাদের ভর্তি প্রক্রিয়াও বেশির ভাগটাই অনলাইনে হবে। তবে আমরা অবশ্য অনলাইন ও অফলাইন— দু’ভাবেই ইন্টারভিউয়ের ব্যবস্থা রাখব। যাঁরা স্কুলের খুব কাছে থাকেন, তাঁরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুলে এসেই ইন্টারভিউ দিতে পারবেন। তবে বর্তমান পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে অনলাইনকেই অগ্রাধিকার দেব।” সুজাতা জানান, কোনও অভিভাবক অনলাইনে সড়গড় না-হলে স্কুলে গিয়ে ইন্টারভিউ দিতে পারবেন।

শুধুমাত্র কন্টেনমেন্ট জ়োনে যাঁরা থাকেন, তাঁদের ক্ষেত্রে অনলাইন ইন্টারভিউয়ের পরিকল্পনা করেছেন রামমোহন মিশন হাইস্কুলের প্রিন্সিপাল সুজয় বিশ্বাস। তিনি বলেন, “আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই অভিভাবকদের ডাকছি। তবে বাচ্চাদের ডাকছি না। যাঁরা কন্টেনমেন্ট জ়োনে থাকেন, তাঁদের অনলাইনে ইন্টারভিউ নেওয়া যায় কি না, সেই ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা চলছে।”

মহাদেবী বিড়লার প্রিন্সিপাল অঞ্জনা সাহা জানাচ্ছেন, এ বার তাঁদের নার্সারিতে ভর্তির গোটা প্রক্রিয়াই অনলাইনে হবে। তিনি বলেন, “আমরা অনলাইনে যখন ক্লাস নিতে পারছি, তখন অভিভাবকদের ইন্টারভিউ-ও নিশ্চয়ই নিতে পারব। বাচ্চাদের তো আমরা বিশেষ কিছু প্রশ্ন করি না। অভিভাবকদের ছোট ছোট দল গড়ে ইন্টারভিউ নেওয়ার পরিকল্পনা করেছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement