প্রতীকী ছবি।
দিনেদুপুরে দুই মহিলাকে বঁটি দিয়ে কোপ মেরে ডাকাতির ঘটনা ঘটল হরিদেবপুরে। বুধবার ডায়মন্ড পার্কের ওই ঘটনায় জখম দুই মহিলা একবালপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের মধ্যে এক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের এক জন আহত এক মহিলার নিকটাত্মীয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, হরিদেবপুর থানা এলাকার ৭/৫৬ ডায়মন্ড পার্কে থাকেন চিকিৎসক অরূপকুমার দাস। তাঁর স্ত্রী মারা গিয়েছেন। এ দিন দুপুরে বাড়িতে ছিলেন অরূপবাবুর মেয়ে শাল্মলী দাস এবং পরিচারিকা কল্পনা। দুপুর ২টো নাগাদ কলিং বেল বাজতে কল্পনা দরজা খুলে দেখেন, বাইরে দাঁড়িয়ে শাল্মলীর মামাতো বোন টিয়া রায় ও তার এক বন্ধু। তারা দু’জনে বাড়ির ভিতরে ঢোকে। পুলিশ জানিয়েছে, এর কিছু ক্ষণ পরে সবাই দোতলায় চলে যান।
শাল্মলী পুলিশকে জানিয়েছেন, টিয়া ও তার বন্ধু হঠাৎই দোতলার রান্নাঘর থেকে বঁটি নিয়ে তাঁকে ও পরিচারিকা কল্পনাকে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে। লাঠি দিয়ে তাঁদের বেধড়ক মারধরও করা হয়। মারের চোটে অজ্ঞান হয়ে পড়েন শাল্মলী ও কল্পনা। সেই ফাঁকে অভিযুক্তেরা দোতলার আলমারি থেকে নগদ প্রায় দেড় লক্ষ টাকা এবং লক্ষাধিক টাকার গয়না নিয়ে চম্পট দেয়।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার বেশ কিছু ক্ষণ পরে জ্ঞান ফিরতে শাল্মলী দেখেন, মেঝে রক্তে ভেসে যাচ্ছে। পাশে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে আছেন কল্পনা। কোনওক্রমে পাশে থাকা মোবাইল নিয়ে বাবাকে পুরো ঘটনা জানান মেয়ে। অরূপবাবু সঙ্গে সঙ্গে খবর দেন প্রতিবেশীদের। তাঁরা ছুটে এসে দু’জনকে উদ্ধার করে একবালপুরের ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতাল সূত্রের খবর, শাল্মলীর অবস্থা স্থিতিশীল হলেও কল্পনা আশঙ্কাজনক। তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
এ দিকে, অরূপবাবুদের এক আত্মীয় তাঁর বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে এসে কেন পিসতুতো দিদিকে ও পরিচারিকাকে কোপ মেরে লুটপাট চালাল, সে বিষয়ে ধন্দে পুলিশ। ডিসি (দক্ষিণ-পশ্চিম) নীলাঞ্জন বিশ্বাস বলেন, ‘‘পারিবারিক আক্রোশের জেরে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তদন্ত শেষ না হলে বিস্তারিত কিছু বলা যাচ্ছে না। আহত দু’জন কথা বলার অবস্থায় নেই। তাঁদের বয়ান নিলে সব কিছু স্পষ্ট হবে।’’ বুধবার রাতে অরূপবাবুকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেন হরিদেবপুর থানার তদন্তকারী অফিসারেরা। তবে রাত পর্যন্ত অভিযুক্ত টিয়া ও তার বন্ধুকে গ্রেফতার করা যায়নি। পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ডাকাতি এবং খুনের চেষ্টার অভিযোগে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।