স্মৃতিবিজড়িত: চলছে ঘড়ির দেখভাল। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
চল্লিশ বছর পরে ফের দুলতে শুরু করেছে পেন্ডুলাম! ঘণ্টা বাজিয়ে সময় বলছে ঘড়ি!
মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন মেন-এর জন্য একটি দেওয়াল ঘড়ি কিনেছিলেন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। রোজ দম দিয়ে ঘড়িটি চালাতেন তিনি নিজেই। সেই ঘড়ি খারাপ হয়ে পড়ে ছিল গত ৪০ বছর ধরে। স্কুল কর্তৃপক্ষ অবশেষে সেটি সারানোয় ফের চলতে শুরু করল ওই ঘড়ি।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, বিদ্যাসাগর ঘড়িটি কিনেছিলেন ১৮৭৪ সালে। ঘড়িটিকে তিনি নিজের, অর্থাৎ প্রধান শিক্ষকের ঘরে রেখেছিলেন। তখন থেকে ওই ঘরেই ঘড়িটি রাখা ছিল। স্কুলের টিচার ইন-চার্জ প্রণবকুমার বড়ুয়া বলেন, ‘‘ঘড়িটি বন্ধ অবস্থায় পড়ে ছিল প্রায় ৪০ বছর। এ রকম একটি ঐতিহাসিক ঘড়ি কাকে দিয়ে সারাব, তা নিয়ে ধন্দ ছিল। শেষ পর্যন্ত খুব পুরনো আমলের ঘড়ি সারাতে পারদর্শী এক জনকে দিয়ে সারিয়েছি।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
ঘড়িটি সারানোর দায়িত্ব নিয়েছিলেন স্কুলেরই এক প্রাক্তনী উজ্জ্বল চক্রবর্তী। উজ্জ্বলবাবু বলেন, ‘‘ঘড়িটির হুইল ও পিনিয়ন খারাপ হয়ে গিয়েছিল। সেগুলি ঠিক করতেই ঘড়িটি আবার চলতে শুরু করেছে।’’ স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির প্রেসিডেন্ট তপতী ঘোষ জানান, সারানোর পরে বৃহস্পতিবার তাঁরা ঘড়িটি নিয়ে এসেছেন স্কুলে। যে দেওয়ালে বিদ্যাসাগর মশাই সেটি টাঙিয়েছিলেন, সেখানেই তাঁরা ফের টাঙিয়ে দিয়েছেন।
একটি মার্কিন সংস্থা নির্মিত ওই ঘড়িতে রোজ দম দিতে হয়। তারিখও জানিয়ে দেয় সেটি। প্রণববাবু বলেন, ‘‘বিদ্যাসাগর মশাইয়ের ঘরটি যেমন ছিল, তেমনই রাখার চেষ্টা করেছি সব সময়ে। তাঁর আমলের একটি গোল টেবিল রয়েছে ওই ঘরে। আছে একটি সিন্দুকও।’’
বহু ইতিহাসের সাক্ষী ওই ঘড়িটি ফের চলতে শুরু করায় শিক্ষকদের মতো খুশি পড়ুয়ারাও। চাবি ঘুরিয়ে ঘড়িতে দম দিতে দিতে প্রণববাবু বলেন, ‘‘বিদ্যাসাগর মশাইয়ের স্মৃতিধন্য ঘড়িটি উনিশ শতকের স্মৃতিচিহ্ন হয়ে দেওয়ালে ঝুলছে। ঘড়িটি সচল রাখার দায়িত্ব এখন এই প্রজন্মের।’’