Singer KK Death

Singer KK Dies: আমার অসুস্থ লাগছিল, দম বন্ধ হয়ে আসছিল

ভিড়ের সঙ্গে মেন গেট টপকাতে পারলেও আমরা অডিটোরিয়ামে ঢুকতে পারিনি। অডিটোরিয়ামের সামনে তখন প্রায় ৩০০ জনের ভিড়।

Advertisement

তৃষা দাস (গোখেল মেমোরিয়াল গালর্স কলেজের ছাত্রী)

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২২ ০৭:১৬
Share:

ফাইল চিত্র।

কেকে-র অনুষ্ঠান দেখতে মঙ্গলবার বিকেল ৫টা নাগাদ পৌঁছে গিয়েছিলাম নজরুল মঞ্চে। সঙ্গে জেঠতুতো দিদি রিয়া দাস, ভাই মৃগাঙ্ক দাস, ভাইয়ের এক বন্ধু ও আমার এক বন্ধু। আমাদের পাস ছিল না।

Advertisement

গিয়ে দেখি, ভিতরে ঢোকার জন্য ১০০-১৫০ জন ছেলেমেয়ে মেন গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে। আর ভিতরে, অডিটোরিয়ামের বাইরে শ’দেড়েকের ভিড়। সাড়ে ৫টা নাগাদ গাড়ি করে কেকে ঢোকার সময়ে এক বারই মেন গেট খোলা হয়। তখনই বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা ভিড়টা গেটে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। প্রায় ১৫০ জন ধাক্কাধাক্কি করে ঢুকে পড়ে। ঢুকে পড়ি আমরাও। ধাক্কাধাক্কি-ধস্তাধস্তিতে অনেকে পড়ে গিয়ে জখম হয়। গেটের মুখেই দু’টি মেয়ে পড়ে যায়। ওদের উপর দিয়েই অনেকে চলে যায়। ওরা চিৎকার করে ওঠে।

ভিড়ের সঙ্গে মেন গেট টপকাতে পারলেও আমরা অডিটোরিয়ামে ঢুকতে পারিনি। অডিটোরিয়ামের সামনে তখন প্রায় ৩০০ জনের ভিড়। রয়েছেন পুলিশকর্মী ও কেকে-র বাউন্সারেরাও। বাউন্সারদের সঙ্গে কেকে-র ভক্তদের তর্কাতর্কি-ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। আমি তখন আতঙ্কিত। ভাবছিলাম, পরদিনের কাগজে নির্ঘাত বেরোবে, কেকে-র শো দেখতে এসে কেউ মারা গিয়েছে বা জখম হয়েছে। মনে হচ্ছিল, আর বাড়িই ফিরতে পারব না। ওখানেই মরে যাব। ভাইকে খুঁজে না পেয়ে চিৎকার করে ডাকছিলাম। এরই মধ্যে পড়ে গিয়ে একটি ছেলের হাত কনুই পর্যন্ত কেটে গেল।

Advertisement

কিছু ক্ষণের মধ্যে প্রায় ২০০ জনকে অডিটোরিয়ামের সামনে থেকে পিছনের গেট দিয়ে বার করে দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে আমরাও ছিলাম। তবে, আশা ছাড়িনি। প্রায় ৪৫ মিনিট দাঁড়িয়ে ছিলাম। মঞ্চের পিছনের তিনটি ছোট গেটে তখন ভাঙচুর শুরু হয়েছে। মাঝের গেটটি ভেঙে ফেলা হয়। গেট ও পাঁচিল টপকে অনেকে ঢুকে গিয়েছে। কেউ সিঁড়ি টপকে ঢুকছে, কেউ রেলিং টপকে। পুলিশকর্মীরা ভিডিয়ো করছিলেন।

এর পরে উল্টোডাঙার স্যর গুরুদাস মহাবিদ্যালয়ের ইউনিয়নের ছেলেরা বাইরে অপেক্ষারত সকলকে ঢুকতে দিলে আমরাও সাড়ে ৬টা নাগাদ অডিটোরিয়ামে ঢুকি। ভিতরে দাঁড়ানোর জায়গা নেই। এক-একটি চেয়ারে তিন-চার জন দাঁড়িয়ে। এসি চালু না বন্ধ, বোঝা যাচ্ছে না। সকলেই ঘামছি। আমার অসুস্থ লাগছিল, দম বন্ধ হয়ে আসছিল। একটি মেয়ে বার বার সংজ্ঞা হারাচ্ছিল।

কেকে মঞ্চে আসার পরে ওঁকে দেখে খুব চিৎকার করছিলাম। কেকে-র কষ্ট হচ্ছিল। কষ্ট হচ্ছিল আমাদেরও। জেঠতুতো দিদি ছটফট করছিল। তাই অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার আগেই ৮টা নাগাদ আমরা বেরিয়ে আসি।

গত মাসে নজরুল মঞ্চে গায়ক দর্শন রাভালের অনুষ্ঠানেও ভিড় হয়েছিল। কিন্তু এতটা নয়। কিন্তু কেকে-র বেলায় এমন বাঁধভাঙা ভিড় হবে, বুঝতে পারিনি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement