প্রতীকী ছবি।
সংস্থার প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা নিয়ে বিবাদ ছিল। তবে সহকর্মীর ৪৫০ টাকা চুরিকে কেন্দ্র করেই মূলত গন্ডগোলের সূত্রপাত। আর তার জেরেই দীর্ঘক্ষণ যুবককে ঘিরে ধরে চলে মারধর। শনিবার রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকার ওই ঘটনায় লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয় অমিতরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় (৩৫) নামে ওই যুবকের শরীরের একাধিক জায়গায়। টাকা চুরি করার কথা স্বীকার না করায় তাঁর মাথায় লাঠি দিয়েও মারা হয়। আর সেই মারধরের জেরেই মৃত্যু হয় তাঁর। ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে অমিতরঞ্জনের মাথা, হাত, পা, কিডনি-সহ শরীরের প্রায় ১০টি জায়গায় আঘাতের চিহ্ন মিলেছে বলে লালবাজার সূত্রের খবর।
গত শনিবার রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকার ওই ঘটনায় খুনের ধারা যোগ করা হতে পারে বলে লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে। রবিবারই অমিতরঞ্জনের তিন সহকর্মী সুমন মণ্ডল, দেবাশিস অধিকারী এবং সোমনাথ চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাদের সোমবার আলিপুর আদালতে তোলা হলে দু’দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জেনেছে, ওই বিমা সংস্থার প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা বাজার থেকে তুলেছিলেন অমিতরঞ্জন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সেই টাকা তিনি সংস্থায় জমা করছিলেন না। এ নিয়ে সংস্থার মালিক সুমনের সঙ্গে বিবাদ ছিল ওই যুবকের। তবে ঘটনার দিন সহকর্মী দেবাশিসের ব্যাগ থেকে ৪৫০ টাকা খোয়া যাওয়াকে কেন্দ্র করেই বচসা শুরু হয় অমিতরঞ্জনের সঙ্গে। আর তার জেরেই সকলে মিলে ঘিরে ধরে মারধর করা হয় ওই যুবককে। দেবাশিসই লাঠি দিয়ে অমিতকে মারধর করে বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। বেধড়ক মারধরে ওই যুবক অসুস্থ হয়ে পড়লে সহকর্মীরা সকলে মিলে ওই যুবককে সুমনের গাড়িতে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যায়। অপরিচিত ওই যুবককে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে এসেছে— এমন একটা গল্পও ফাঁদে তারা। কিন্তু চিকিৎসকেরা অমিতরঞ্জনকে মৃত বলে ঘোষণা করলে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে অভিযুক্তেরা।
রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকার ওই ঘটনায় ইতিমধ্যেই তদন্তভার হাতে নিয়েছে কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড শাখা। এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ স্পষ্ট। তবে পুরনো কোনও রকম শত্রুতা ছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’