আহত: কুকুরের আক্রমণে রক্তাক্ত অবিনাশ কুমারের হাত। নিজস্ব চিত্র
বচসা বেধেছিল দুই ব্যক্তির মধ্যে। এক জনের সঙ্গে ছিল তাঁর পোষ্য। অভিযোগ, উত্তেজনার বশে আচমকাই তিনি নিজের পোষ্যটিকে অন্য জনের উদ্দেশে ছেড়ে দেন। মালিকের নির্দেশ পেয়ে এর পরে সেই পোষ্যটি অপর ব্যক্তিকে আঁচড়ে-কামড়ে ক্ষতবিক্ষত করে দেয় বলে অভিযোগ।
শুক্রবার রাতে এই ঘটনা ঘটেছে সল্টলেকে, কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের আবাসনের আইসি ব্লকে। কুকুর লেলিয়ে দিয়ে অন্যকে জখম করার অভিযোগে বিধাননগর (দক্ষিণ) থানার পুলিশ সুমিতেশ কেনেডি নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। শনিবার ধৃতকে বিধাননগর এসিজেএম আদালতে তোলা হলে তাঁকে তিন দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
পুলিশ জানায়, কুকুরের কামড়ে গুরুতর ভাবে জখম হয়েছেন আইসি ব্লকের বাসিন্দা অবিনাশ কুমার। অভিযোগ, তাঁর দিকেই প্রথমে কুকুরটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কুকুরটি অবিনাশকে আক্রমণ করে। তার পরে অবিনাশ কুকুরটিকে ধরতে গেলে তার কামড়ে আরও বেশি করে জখম হন।
এ দিন অভিযুক্তের আইনজীবী কৌশিক দাস এসিজেএম আদালতে দাঁড়িয়ে তাঁর মক্কেলের তরফে ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন। বিচারকের সামনে তিনি দাবি করেন, পোষ্যটিকে এখনও উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি। তাই এমন ঘটনা ঘটেছে। পোষ্যটি ভেবেছিল, তার মালিকের উপরে আক্রমণ হতে পারে। তাই কুকুরটি ওই ব্যক্তিকে আক্রমণ করেছে। আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেল কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী। দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁর চাকরির ক্ষতি হতে পারে। বিচারক অভিযুক্তকে তিন দিন জেল হেফাজতে রাখতে নির্দেশ দেন।
কুকুরের কামড়ে জখম অবিনাশ জানান, তিনি ব্লকের আবাসিক সংগঠনের সম্পাদক। তাঁর অভিযোগ, শুক্রবার রাতে অভিযুক্ত ব্যক্তি প্রথমে সংগঠনের সভাপতির কোয়ার্টার্সে গিয়ে এক দফা বচসা করেন। অবিনাশের কথায়, ‘‘সভাপতির ফোন পেয়ে আমি আরও কয়েক জনকে নিয়ে তাঁর কোয়ার্টার্সের দিকে রওনা দিই। ইতিমধ্যেই কেনেডি সেখানে নিজের কুকুর নিয়ে হাজির হন। আমরা সভাপতির কোয়ার্টার্সে পৌঁছতেই কেনেডি আমাদের দিকে কুকুরটিকে ছেড়ে দেন। কুকুরটি আমাকে আক্রমণ করে।’’
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী অজয় প্রসাদ জানান, বচসা চলাকালীন কুকুরটি অবিনাশকে আক্রমণ করে। তাঁকে আঁচড়ে-কামড়ে ক্ষতবিক্ষত করে দেয়। ইতিমধ্যে কুকুরটিকে ধরতে গেলে ফের সে অবিনাশকে কামড়ায়। তাঁর কথায়, ‘‘কুকুরটি যাতে আর কাউকে আক্রমণ করতে না পারে, তার জন্য ওকে আটকানোর চেষ্টা করি। তাতে কুকুরটি আরও বেশ কয়েক বার কামড়ায়। এর পরে আমি সেখান থেকে কোনও মতে পালিয়ে যাই।’’
ঘটনার পরে অবিনাশকে নিয়ে প্রথমে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতাল এবং পরে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছন কয়েক জন। রাতে হাসপাতাল থেকে ফিরে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা। এর পরেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ।