minibus

Minibus: মেয়াদ শেষ বহু নথির, রয়েছে সিগন্যাল ভাঙার অভিযোগ

প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, জরাজীর্ণ বাসটি অন্য গাড়িতে পাশ কাটাতে গিয়ে আচমকা উল্টে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২২ ০৭:২০
Share:

প্রতীকী ছবি।অতর্কিতে: (১) ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিংয়ের কাছে রাস্তার পাশের বাতিস্তম্ভে ধাক্কা মেরে উল্টে যায় এই মিনিবাসটি। ছবি: সুমন বল্লভ।

কোনও রকম বৈধ নথি ছাড়াই ছুটছিল রবিবার ডোরিনা ক্রসিংয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়া মিনিবাসটি। সেটির নথি পরীক্ষা করতে গিয়ে এই তথ্য জেনে চোখ কপালে উঠেছে পুলিশ এবং পরিবহণ দফতরের আধিকারিকদের। এ দিন বেপরোয়া গতিতে ছুটতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়া ডব্লিউবি-১১বি ৩০৪৮ মিনিবাসটির বিরুদ্ধে শতাধিক বার সিগন্যাল ভাঙার অভিযোগও রয়েছে। বাসটির স্বাস্থ্য সংক্রান্ত শংসাপত্রের মেয়াদ ফুরিয়েছে বছর চারেক আগে। দূষণ এবং বিমা সংক্রান্ত জরুরি কাগজের মেয়াদও উত্তীর্ণ অনেক আগে। এমনকি বাসটির মালিকের মৃত্যুর পরে মালিকানা বদল সংক্রান্ত নথি হস্তান্তর না হওয়ায় মিনিবাসটিকে ইতিমধ্যেই কালো তালিকাভুক্ত করে রেখেছে হাওড়ার আঞ্চলিক পরিবহণ কার্যালয় (আরটিও)। কার্যত কোনও রকম বৈধ নথির তোয়াক্কা না করে বাসটি কী ভাবে শহরের রাস্তায় গত সাড়ে তিন বছর ধরে ছুটছিল, সেই প্রশ্নই এখন উঠতে শুরু করেছে।

Advertisement

প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, জরাজীর্ণ বাসটি অন্য গাড়িতে পাশ কাটাতে গিয়ে আচমকা উল্টে যায়। প্রাথমিক ভাবে চাকা ফেটে যাওয়ার কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে মনে হলেও অন্যান্য কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে পরিবহণ দফতরের নথি থেকে জানা গিয়েছে, ২০০৯ সালের ১৬ নভেম্বর বাসটির পারমিট রেজিস্ট্রেশন হয়েছিল।

১২ বছরের বেশি বয়সি মিনিবাসটির আয়ু ফুরিয়ে যাওয়ার কথা আর বছর দুয়েকের মধ্যেই। এর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত শংসাপত্রের মেয়াদ ফুরিয়েছে ২০১৮ সালের ৫ নভেম্বর। বিমা সংক্রান্ত নথির মেয়াদ ফুরিয়েছে ওই বছরেরই ১১ অক্টোবর। দূষণ সংক্রান্ত নথির মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২০ সালের ৪ সেপ্টেম্বর। পথ কর মেটানো হয়েছে ২০১৮ সালের ১৫ মে পর্যন্ত।

Advertisement

যে ভাবে একাধিক নথির বৈধতা ফুরিয়ে যাওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে বাসটির পারমিটের নবীকরণ করা হয়নি বলেই আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট মহল। সরকারি ভাবে ২০১৮ সালের নভেম্বরের পর থেকে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত শংসাপত্র ছাড়াই গত সাড়ে তিন বছর ধরে পথে ছুটছিল বাসটি। পার্ক সার্কাস-বাঁকড়া রুটের আরও একাধিক মিনিবাসের ক্ষেত্রে এমন অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এমনকি খরচ বাঁচাতে বহু ক্ষেত্রে কেরোসিন ব্যবহার করেও এক রুটে একাধিক মিনিবাস চালানোর অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়দের একাংশ জানাচ্ছেন, সরকারি
বিধিকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়েই ছুটছে ওই রুটের বেশির ভাগ মিনিবাস। পুলিশের খাতায় এ দিনের দুর্ঘটনাগ্রস্ত মিনিবাসটির বিরুদ্ধে ১৯৪ বার সিগন্যাল ভাঙার অভিযোগ রয়েছে।

কিন্তু নথি ছাড়া সাড়ে তিন বছর ধরে কী ভাবে চলছিল বাসটি, তার কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি পুলিশ এবং পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা। এ প্রসঙ্গে সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিস-এর সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, ‘‘এই দুর্ঘটনায় পরিবহণ শিল্পের হাঁড়ির হাল আবারও সামনে এসেছে। আয় তলানিতে গিয়ে পৌঁছনোয় অনেকেই যাত্রী নিরাপত্তার সঙ্গে আপস করে বাস নামাচ্ছেন। তাতেই পরিস্থিতি
জটিল হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement