কলকাতা পুরসভা। ফাইল চিত্র।
কালীপুজোর সময়ে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড়, এমনই পূর্বাভাস মৌসম ভবনের। বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপ শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রং’ নামে আছড়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। সেই ঝড় কোথায় আঘাত হানবে, তার স্পষ্ট ইঙ্গিত না থাকলেও কলকাতা পুরসভার কমিশনার বিনোদ কুমার বিভিন্ন দফতরকে জরুরি প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তার পরে বৃহস্পতিবারেই পুরসভা আগাম প্রস্তুতি নিতে বৈঠক সেরেছে।
পুর নিকাশি দফতর সূত্রের খবর, শহরের ৭৯টি পাম্পিং স্টেশনে ৪৩০টি পাম্প রয়েছে। সেগুলি যাতে ঠিক ভাবে কাজ করে, পাম্পিং স্টেশনের কর্তব্যরত আধিকারিকদের সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জরুরি সব দফতরের ছুটি বাতিল করেছে পুরসভা। পুরসভার কন্ট্রোল রুম থেকে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি চলবে। এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘পুরসভার এখন দু’টি কন্ট্রোল রুম রয়েছে। মাসকয়েক আগে উদ্বোধন হওয়া দ্বিতীয় কন্ট্রোল রুমে একাধিক বড় স্ক্রিন রয়েছে। শহরের কোথাও জল জমে থাকলে স্ক্রিনে তা ভেসে উঠবে।’’ কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিংহ বলেন, ‘‘জমা জল বার করতে পুরসভার কেন্দ্রীয় দল ছাড়াও বরোভিত্তিক গাড়ি ও কর্মীরা কাজ করবেন।’’
কোথাও গাছ ভেঙে পড়লে ১৬টি বরোয় পৃথক দল গড়ে কাজ করবে উদ্যান দফতর। সংশ্লিষ্ট দফতরের এক আধিকারিক জানান, প্রত্যেক বরোয় গাড়ি, কর্মী ও যন্ত্রপাতি থাকবে। বাতিস্তম্ভ থেকে দুর্ঘটনা এড়াতে আলো দফতরকে অতি সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘জমা জল ও বাতিস্তম্ভ, এই দুইয়ের সংস্পর্শে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একাধিক মৃত্যু ঘটেছে। তাই আলো দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।’’ ওই দফতরকে সিইএসসি-র সঙ্গে যোগাযোগ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, মঙ্গলবার থেকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়ার আশঙ্কা প্রবল। পুরসভা সূত্রের খবর, কন্ট্রোল রুম থেকে বরোর এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখবেন আধিকারিকেরা। বরোর চেয়ারম্যানেরাও কাজে তদারকি করবেন। ভারী বৃষ্টিতে নিচু এলাকায় জল জমলে, বাসিন্দাদের আশ্রয়ে তৈরি রাখা হবে পুরসভার কমিউনিটি হল বা পুর প্রাথমিক বিদ্যালয়।
বৃহস্পতিবার পুর কমিশনার বিনোদ কুমার বলেন, ‘‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ সামলাতে যাবতীয় প্রস্তুতি থাকছে। একাধিক দফতরকে সতর্ক থাকতেও বলা হয়েছে।’’
অন্য দিকে, ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কবার্তায় সিঁদুরে মেঘ দেখছে দমদমের তিন পুরসভার প্রশাসন। একেই ওই তিন পুর এলাকা মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত আড়াইশোর বেশি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। দক্ষিণ দমদমেই মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। তাই জল জমে আছে কোথায় কোথায়, তা জানতে দক্ষিণ দমদমে ড্রোনের মাধ্যমে নজরদাবি চালানো হবে। কোথাও কোথাও আবার পুরকর্মীদের প্রস্তুত রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দমদম, উত্তর দমদম এবং দক্ষিণ দমদমের পুর কর্তৃপক্ষ।