প্রতীকী ছবি।
রাস্তার পাশের ঝোপ থেকে একটি মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় রহস্য দানা বেঁধেছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে সোনারপুর থানার বারুইপুর বাইপাসের ধামাইতলা এলাকায় ওই দেহটি মিলেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম দুর্গা শঙ্কর (৪৭)। তাঁর বাড়ি বারুইপুর থানা এলাকার মল্লিকপুরের ঘোষপাড়ায়।
তদন্তে পুলিশ জেনেছে, মঙ্গলবার দুপুরে এলাকার কয়েক জনের সঙ্গে পিকনিকে গিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। সেখানেই তিনি অসুস্থ বোধ করে জ্ঞান হারান। দুর্গাকে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। এর পরে মৃতের সঙ্গীরা জানান, মৃত্যু সম্পর্কে নিশ্চিত হতে তাঁরা কলকাতার কোনও হাসপাতালে যেতে চান। সেই মতো মৃতদেহ নিয়ে একটি গাড়ি ভাড়া করে রওনা হন সকলে। কিন্তু অভিযোগ, বারুইপুর বাইপাসের ধামাইতলায় একটি ঝোপের মধ্যে দেহটি ফেলে চলে যান তাঁরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, গাড়ির চালক বাপি মণ্ডল নিজের এলাকায় ফিরে গিয়ে ঘটনাটি স্থানীয় লোকজনকে জানান। প্রতিবেশীরা বিষয়টি পুলিশকে জানানোর পরামর্শ দেন। সেই মতো রাতে সোনারপুর থানায় এসে ঘটনাটি জানান বাপি। এর পরে তাঁকে সঙ্গে নিয়েই ঘটনাস্থলে যান পুলিশকর্মীরা। রাস্তার পাশের ঝোপ থেকে দেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়। ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েই ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
তবে ঘটনার পর থেকে মৃতের সেই সঙ্গীরা বেপাত্তা। মাস দুয়েক আগে ওই এলাকার একটি বাড়িতে ভাড়াটে হিসেবে থাকতে শুরু করেছিলেন দুর্গা। ঘটনার দিন ওই এলাকারই বাসিন্দা দু’জন মহিলা ও দু’জন পুরুষের সঙ্গে পিকনিক করতে গিয়েছিলেন তিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, আপাতদৃষ্টিতে মৃতদেহের গায়ে কোনও আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। চালক বাপি জানিয়েছেন, প্রথমে তাঁকে বলা হয়েছিল, অসুস্থ এক জনকে কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু ধামাইতলা এলাকায় আসার পরে তাঁকে গাড়ি থামাতে বলা হয়। তার পরেই দুর্গার দেহটি গাড়ি থেকে নামিয়ে ঝোপের মধ্যে ফেলে দেন সঙ্গীরা। গাড়ির ভাড়া মিটিয়ে সেখান থেকে চলে যান তাঁরা। বাপির বয়ানের ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিশের অনুমান, পিকনিকে অতিরিক্ত মদ্যপান করে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন দুর্গা। তারই জেরে সম্ভবত তিনি হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পরেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু সঙ্গীরা তাঁর দেহ ঝোপে কেন ফেলে দিলেন, তা জানতে তাঁদের খুঁজছে পুলিশ।