ব্যবসায়ীর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। প্রতীকী ছবি।
সাতসকালে এক পরিবহণ ব্যবসায়ীর অফিসে ঢুকে তাণ্ডব চালাল একদল দুষ্কৃতী। তাদের বাধা দিতে গিয়ে বেধড়ক মার খান অফিসের কর্মীরা। এই ঘটনায় দুই কর্মী আহত হয়েছেন। শুধু মারধর করেই ক্ষান্ত হয়নি অভিযুক্তেরা। অফিসে ভাঙচুরও চালায় তারা। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে জোড়াবাগান থানা এলাকায়। ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে আটক করা হয়েছে চার জনকে।
দীনদয়াল জোশী নামে ওই ব্যবসায়ী লিখিত অভিযোগে পুলিশকে জানিয়েছেন, মহাত্মা গান্ধী রোডে তাঁর একটি অফিস রয়েছে। এ দিন সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ অফিসের সামনে লরি থেকে মালপত্র খালাস করছিলেন কয়েক জন কর্মী। সেই সময়ে আচমকা একদল যুবক এসে ওই কর্মীদের সঙ্গে বচসায়জড়ায়। দীনদয়ালের দাবি, বচসা চলাকালীন অভিযুক্তেরা তাঁর অফিসে ঢুকে পড়ে। উপস্থিত কর্মীরা প্রতিবাদ করায় ওই দুষ্কৃতীরা তাঁদের উপরে চড়াও হয়। অভিযোগ, কর্মীদের কিল, চড়, ঘুসি মারা হয়। ভাঙচুরও চলে অফিসে। চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে এলাকার অন্য ব্যবসায়ীরা চলে এলে অভিযুক্তেরা পালায়। অফিসের কর্মীরাই আহত দুই কর্মীকে হাসপাতালে নিয়ে যান। দীনদয়াল বলেন, ‘‘ওই যুবকেরা অফিসে ঢুকে কোনও কথা না বলে কর্মীদের বেধড়ক মারতে শুরু করে। অফিসের জিনিসপত্র ছুড়ে ফেলে দেয়। বাধা দিতে গেলে মার খান দু’জন বয়স্ক কর্মী। ওরা কেন এমন করল, বুঝতে পারছি না।’’
পুলিশ জানিয়েছে, দোকানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজের পাশাপাশি রাস্তার সিসি ক্যামেরার ফুটেজও পরীক্ষা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, এই হামলার পিছনে ব্যবসায়িক শত্রুতা আছে কি না, তা-ও দেখছেন তদন্তকারীরা। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, লরি থেকে মাল নামানোর সময়ে তা কোনও ভাবে পথচলতি এক যুবকের গায়ে গিয়ে পড়ে। যা থেকে বচসার সূত্রপাত। সেটাই মারধরে গড়ায়। এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, ব্যবসায়ীর উপরে হামলার ঘটনা এই প্রথম নয়। গত বছর মে মাসে বেলেঘাটার এক ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল কয়েক জন দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। অনির্বাণ সাহা নামে ওই ব্যবসায়ীর প্লাইউডের দোকান রয়েছে। তাঁর ‘অপরাধ’ ছিল, তিনি দোকান সারাইয়ের আগে দুষ্কৃতীদের দাবি মতো টাকা দিতে চাননি। এ ছাড়া, গত বছরেরই এপ্রিলে পাথুরিয়াঘাটায় পার্কিং সংক্রান্ত বিবাদে এক ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল। ওই ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল এলাকার আর এক দোকানির। উঠেছিল ব্যবসায়িক শত্রুতার অভিযোগও।
সোমবারের ঘটনার পরেও মহাত্মা গান্ধী রোড এলাকার অন্য ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত। এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘সকাল থেকে এই জায়গা ভিড়ে ঠাসা থাকে। ব্যবসায়িক কারণে প্রচুর লোক যাতায়াত করেন। সেখানে এক জনের দোকানে ঢুকে হামলার ঘটনার পরে আমাদের নিরাপত্তা কোথায়?’’ যদিও পুলিশের তরফে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়ার পাশাপাশি নিরাপত্তা জোরদার করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।