প্রতীকী ছবি।
আব্দুল মান্নান তখন শশা কিনছিলেন। মাথা নুইয়ে শশার দরদাম করছিলেন। হঠাৎই ঘাড়ের উপর কোথা থেকে যেন উড়ে এসে পড়ল একটা বাছুর! কোথা থেকে পড়ল বাছুর? পরে জানা যায়, ৭০ ফুট উপরে একটি বাড়ির ছাদ থেকে তাঁর উপরে পড়েছে ওই বাছুরটি। গুরুতর আহত অবস্থায় মান্নান আপাতত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অত উঁচু থেকে পড়ায় মৃত্যু হয়েছে ৬ মাসের বাছুরটির। রবিবার সাত সকালে তিলজলার মসজিদ বাড়ি লেনে এই ঘটনা ঘটে।
পুলিশ সূত্রে খবর, আব্দুল মান্নান তিলজলারই বাসিন্দা। রোজকারের মতো ওই দিনও তিনি সবজি কিনতে গিয়েছিলেন। একটি সব্জি দোকানির সঙ্গে শশার দরদাম করছিলেন। তখনই ঘটে এই ঘটনাটি। ৪ তলা বাড়ির ছাদ থেকে তাঁর উপরে হুড়মুড়িয়ে পড়ে বাছুরটি। ৮৫ কিলোগ্রামের ওই বাছুরটি তাঁর উপরে পড়ার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই রাস্তার উপরে মুখ থুবড়ে পড়ে যান আব্দুল। পরে স্থানীয়েরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। ‘‘প্রথমে কিছু বুঝে উঠতে পারছিলাম না। শুধু বুঝতে পারছিলাম বিশালাকার কিছু একটা আমার উপরে রয়েছে। আমি উঠে দাঁড়াতে পারছিলাম না। কিছু পরে বুঝতে পারি আমার উপরে একটা গরু পড়েছিল’’, হাসপাতাল বিছানা থেকে বললেন আব্দুল। শরীরে বিভিন্ন জায়গায় চোট পেয়েছেন আব্দুল। মাথা সহ দেহের বিভিন্ন অংশে মোট ১৮টি সেলাই দিতে হয়েছে তাঁকে। পাঁজর এবং পা ভেঙে গিয়েছে আব্দুলের।
এই বাড়ির ছাদ থেকেই পড়েছিল বাছুরটি।
কোথায় ছিল বাছুরটি? কী ভাবে পড়ল?
এক প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দা অঞ্জুম আলম জানান, তিলজলা মসজিদ লেনের পাশেই চারতলা ওই বাড়িটিতে দীর্ঘ দিন ধরেই ভাড়া থাকতেন গরুর মালিক মহম্মদ আলম। দু’মাস আগে তিনি ওই বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছেন। তবে তাঁর বাড়ির ছাদে ওই বাছুরটি বাঁধা থাকত। যার দেখভালের জন্য একটি যুবককেও রেখেছিলেন তিনি। রবিবার সকালে বাছুরটিকে স্নান করাচ্ছিল ওই যুবক। এর পরই কোনও কারণে আচমকা তার মেজাজ বিগড়ে যায়। ছাদের মধ্যেই লাফালাফি জুড়ে দেয়। সে সময়ই দড়ি ছিড়ে ছাদ থেকে নীচে পড়ে যায় বাছুরটি।
জখম আব্দুল মান্নান
আরও পড়ুন: ‘সিডাক্টিভ’ পোশাক! টুর্নামেন্ট থেকে নাম তুলতে বাধ্য করা হল দাবাড়ুকে
পুলিশ সূত্রে খবর, ১৯৮০ সাল থেকে ওই এলাকায় খাটাল বেআইনি বলে ঘোষণা হয়েছে। তার পর থেকেই ওই এলাকায় খাটাল নিষিদ্ধ। সে কারণেই হয়তো লুকিয়ে বাছুরটিকে ছাদে রেখেছিলেন মালিক মহম্মদ আলম। তবে মহম্মদ আলম এখন কোথায় রয়েছে তা খোঁজ করছে পুলিশ।