নয়ন সাহা। —ফাইল চিত্র।
দক্ষিণ দমদম পুরসভার ছ’নম্বর ওয়ার্ডে সোমবার এক যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ। অভিযোগের আঙুল ওই ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধির স্বামী, তৃণমূল নেতা অভি দেবনাথ-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার মৃতের পরিবার জানিয়েছে, স্থানীয় সূত্রে তাঁরা জানতে পেরেছেন, খুনের ঘটনা মোবাইলে ভিডিয়ো করেছিলেন অভিযুক্তেরা। এই ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
সোমবার সকালে রক্তাক্ত অবস্থায় নয়ন সাহা (২৫) নামে ওই যুবককে উদ্ধার করে প্রথমে দমদম পুর হাসপাতালে এবং পরে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানেই রাতে মৃত্যু হয় নয়নের। মঙ্গলবার দুপুরে দেহের ময়না তদন্ত হয়।
এ দিন নয়নের বাড়িতে গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তোলেন বাবা নিবাস এবং মা শেফালি সাহা। পরিবার সূত্রের খবর, উচ্চ মাধ্যমিকের পরে হোটেল ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়েছিলেন নয়ন। কিছু দিন ভিন্ রাজ্যে কাজও করেছেন। বর্তমানে একটি অনলাইন সামগ্রী সরবরাহকারী সংস্থায় কাজ করতেন। নয়নের দাদা নিন্টু সাহা জানান, সোমবার সকালে তাঁর ভাই মোটরবাইক সার্ভিসিং করাতে এবং আড্ডা মারতে বেরোন। সাড়ে ৯টা নাগাদ খবর আসে, নয়নকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, অভি দেবনাথের প্রত্যক্ষ মদত এবং উপস্থিতিতে তাঁর দলবল এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রের খবর, নিন্টু তৃণমূল করতেন। তবে গত পুর নির্বাচনে তিনি নিষ্ক্রিয় ছিলেন। সেই থেকেই অভিযুক্তদের আক্রোশ জন্মায়। এ ছাড়া, নয়ন ও তাঁর বন্ধুদের রাজনীতিতে টানতে না পারাও রাগের কারণ বলে দাবি মৃতের পরিবারের। স্থানীয়দের দাবি, নয়নকে মেরে হাত ভেঙে দেওয়া হয়। তাঁর মাথাতেও আঘাত ছিল। তাঁদের আরও অভিযোগ, নয়ন নেশা করেছিলেন, তা থেকে গোলমালেই এমন ঘটেছে বলে একটি তত্ত্ব সামনে আনার চেষ্টা চলছে। তা মানতে চাননি তাঁরা।
স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির যোগ মানতে চাননি। দক্ষিণ দমদম শহর তৃণমূল কংগ্রেসের (দমদম বিধানসভা) সভাপতি সুকান্ত সেনশর্মা জানান, ঘটনাটি বেদনাদায়ক এবং অনভিপ্রেত। পুলিশকে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে। তবে এ দিনও পুরপ্রতিনিধি ঊষা দেবনাথের দেখা মেলেনি।