—প্রতীকী চিত্র।
যৌনকর্মীদের সংগঠনের নেত্রী কাজল বসু সার্ভাইক্যাল বা জরায়ুমুখ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন কিছু দিন আগেই। সোমবার সোনাগাছির পল্লিতে যৌনকর্মীদের ক্যানসার নির্ণয়ের একটি শিবির বসানো হয়েছিল। যৌনকর্মীদের সংগঠন দুর্বারের এই উদ্যোগটির শরিক হয়েছে একটি সর্বভারতীয় বেসরকারি ক্যানসার নিরাময় কেন্দ্র এবং শহরের এক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। উল্লেখ্য, ক্যানসারের প্রকোপ গোটা দেশেই বাড়ছে। সেই সঙ্গে যৌনকর্মীরা নানা কারণে ক্যানসারপ্রবণ গোষ্ঠী বলে চিহ্নিত। এ দিন যে তিন দিনব্যাপী রোগ নির্ণয় শিবির চালু হল, সেখানে মুখের ক্যানসার, স্তন ক্যানসার এবং জরায়ুমুখের ক্যানসার নির্ণয় করা হবে।
উদ্যোগটির অন্যতম পুরোধা, একটি বেসরকারি ক্যানসার নিরাময় কেন্দ্রের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা, চিকিৎসক আখতার জাওয়াদ বলছিলেন, ‘‘যৌনকর্মীদের মধ্যে সার্ভাইক্যাল ক্যানসারের আশঙ্কা খুবই বেশি। কারণ, পুরুষদের থেকে এইচপিভি সংক্রমণের ফলে মেয়েদের এই ক্যানসার হয়। তা ছাড়া, সোনাগাছিতে গুটখা, জর্দা সেবনও বহুল প্রচলিত। সুতরাং মুখের ক্যানসারের দিক থেকেও সোনাগাছির মেয়েরা বিপন্ন।’’ দুর্বারের সচিব বিশাখা লস্কর এবং অন্যতম কর্মকর্তা রতন দলুই বলেন, ‘‘কাজলদির ঘটনার পরেই আমাদের মনে হয়েছিল, মেয়েদের ক্যানসার নির্ণয় পরীক্ষা খুবই জরুরি। এ দিন বিকেল পর্যন্ত ৫০ জন মেয়ের ক্যানসার পরীক্ষা হয়েছে। তিন দিনে অন্তত ১২৫ জনের পরীক্ষা করানোর পরিকল্পনা আছে।’’
শুধু সোনাগাছিতেই ৮-৯ হাজার যৌনকর্মী আছেন। দফায় দফায় ক্যানসার নির্ণয় শিবির চলবে বলে জানাচ্ছেন বিশাখা। দুর্বারের চিফ মেডিক্যাল অফিসার প্রতিম রায় জানান, কয়েক দিন বাদেই পরীক্ষার ফল জানা যাবে। তাঁর কথায়, ‘‘মুখের স্বাস্থ্য এবং নিজে স্তন পরীক্ষার বিষয়ে মহিলাদের সচেতন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সার্ভাইক্যাল ক্যানসারের পরীক্ষাও যে নিয়মিত করানো উচিত, সেটাও বোঝানো হয়েছে।’’
আখতারেরও আশা, যে মহিলারা এ দিন পরীক্ষা করালেন, তাঁরা এর পরে আরও অনেক মেয়েকে সজাগ করবেন। মুখের ক্যানসারের বিপদ নিয়ে সচেতনতার সংস্কৃতিও ধীরে ধীরে গড়ে উঠবে। সেই সঙ্গে তিনি বলছেন, ‘‘যাঁদের ক্যানসার ধরা পড়বে, তাঁদের চিকিৎসার ব্যয়ভারও আমাদের সেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে বহন করা হবে।’’