হাসপাতালে জখম রাধারানি নস্কর। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
স্বামীর খোঁজে বাড়িতে চড়াও হয়েছিল দুষ্কৃতীরা। কিন্তু তাঁকে না পেয়ে স্ত্রীর মাথা লক্ষ্য করে গুলি চালাল তারা। সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ শহরতলির বিষ্ণুপুর থানার রঘুদেবপুর গ্রামে। রাধারানি নস্কর নামে ওই বধূকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে দুপুরে তাঁর মাথায় অস্ত্রোপচার হয়। এই ঘটনায় সোমবার রাতে ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন সকালে ওই গ্রামের বাসিন্দা অরুণ নস্করের বাড়িতে হানা দেয় একদল দুষ্কৃতী। সে সময়ে বাড়িতে ছিলেন তাঁর স্ত্রী রাধারানি। অভিযোগ, সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা বাড়িতে ঢুকে অরুণকে না পেয়ে রাধারানিকে মারধর করতে শুরু করে। পিস্তলের বাট দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করে বলে
অভিযোগ। কোনও রকমে রাধারানি ভিতরে ঢুকে গেলেও ফের বাড়ির বারান্দায় উঠে তাঁকে মারধর করতে থাকে দুষ্কতীরা। এমন সময়ে ওই বধূ ঝাঁটা হাতে তেড়ে এলে তাঁর মাথায় গুলি করা হয় বলে অভিযোগ। এর পরেই চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। গুরুতর জখম রাধারানিকে প্রথমে স্থানীয় একটি চিকিৎসাকেন্দ্রে ও পরে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। দুপুরে সেখানেই তাঁর মাথায় অস্ত্রোপচার হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে তাঁর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
এই ঘটনায় স্থানীয় তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন বিজেপি সমর্থক অরুণ। তাঁর কথায়, ‘‘আমি বিজেপি সমর্থক বলে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক দিলীপ মণ্ডলের গুন্ডাবাহিনীই পরিকল্পিত ভাবে এই আক্রমণ চালিয়েছে।’’ বিজেপির স্থানীয় নেতা অভিজিৎ দাস বলেন, ‘‘বিজেপি সমর্থকদের পরিকল্পিত ভাবে খুন করার চক্রান্ত শুরু হয়েছে। তাঁদের খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। গুন্ডাবাহিনীকে দিয়ে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি করেছে ওরা।’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘এই সরকার হিংসাকেই নীতি হিসেবে মেনে নিয়েছে। বিরোধীদের শেষ করার চেষ্টা হচ্ছে। এ ভাবে সমাজে ভয় এবং প্রতিহিংসার পরিবেশ তৈরি হচ্ছে।’’
যদিও বিষ্ণুপুরের বিধায়ক দিলীপ দাবি করেছেন, দু’পাড়ার মধ্যে গোলমালের জেরে এই ঘটনা। তাঁর কথায়, ‘‘রবিবার ওই এলাকায় কয়েক জনকে মারধর করেছিল রঘুনাথপুর গ্রামের কয়েক জন বাসিন্দা। এ দিন সকালে পাল্টা চড়াও হয়েছিল আক্রান্ত যুবকের দল। তবে গুলি চালানোর ঘটনা নিন্দনীয়। ওই পরিবারটি বিজেপি সমর্থক বলে শুনেছি। পুলিশ তদন্ত করছে।’’ বিধায়কের আরও দাবি, ‘‘বিজেপি নানা জায়গায় শাসকদলের সমর্থকদের মারধর করে প্রমাণ করার চেষ্টা করছে যে, রাজ্যে কোনও আইনশৃঙ্খলা নেই। এটা বিজেপির চক্রান্ত।’’