বেহাল: এ ভাবেই পুলিশ আবাসনের ভিতরে জমে রয়েছে জল। শুক্রবার। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য
পুজোর পরেও মশাবাহিত রোগের প্রকোপ কমছে না বিধাননগর পুর এলাকায়। পুজোর আগে থেকেই ৪ নম্বর বরোর বিভিন্ন ওয়ার্ডে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়ছিল। এ বার সল্টলেকের কেষ্টপুর খাল সংলগ্ন পুলিশ আবাসনে সেই রোগের প্রকোপ বেড়েছে। সূত্রের খবর, ওই আবাসনে প্রায় ৪০০ পরিবারের বসবাস। তার মধ্যে অনেকেই জ্বরে আক্রান্ত। আবাসন সূত্রে খবর, প্রায় ৪০ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে একটি বিল্ডিংয়ে ১০ জন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। সল্টলেকের সিএপি ক্যাম্পের কাছে পুলিশ আবাসনের এই ঘটনা সম্পর্কে অবশ্য সবিস্তার তথ্য নেই পুরসভার কাছে। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তাঁরা খোঁজ নিয়ে অবিলম্বে পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন।
বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, বিধাননগর জুড়ে পুর প্রশাসন মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে তুলনায় সক্রিয়। কিন্তু ওই পুলিশ আবাসন এলাকায় আবর্জনা থেকে ঝোপঝাড়ের ছবি বলছে অন্য কথা। আবাসনের বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, গত ক’মাসে অনেকেই জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। সূত্রের খবর, পুজোর মধ্যেও এক কিশোরী জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তার রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গির উপসর্গ মিলেছে।
পুরসভা সূত্রে খবর, আবাসনের ভিতরের অংশ সাফাইয়ের দায়িত্ব পুরসভার নয়। স্থানীয় কাউন্সিলর তথা বরো চেয়ারম্যান অনিতা মণ্ডল আবাসনে ডেঙ্গির প্রকোপ বৃদ্ধির কথা স্বীকার করেছেন। তবে তাঁর অভিযোগ, ‘‘ওই আবাসনে সাফাইয়ের দায়িত্বে পূর্ত দফতরের থাকলেও পুরসভা মশা নিয়ন্ত্রণ থেকে সাফাইয়ের কাজ করে দেয়। কিন্তু বাসিন্দাদের একাংশের অসহযোগিতার জন্যই পুরকর্মীরা সেখানে কাজ করতে যেতে নারাজ।’’ পূর্ত দফতর জানিয়েছে, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।
পাশাপাশি, কেষ্টপুর খাল এবং ইস্টার্ন ড্রেনেজ চ্যানেলের পাড় বরাবর বিভিন্ন ব্লকে জ্বরের সংক্রমণের ঘটনা ঘটছে। পুরসভার দাবি, জ্বরের সংক্রমণ সত্ত্বেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
শুক্রবার ২০ নম্বর ওয়ার্ডে একটি স্বাস্থ্য শিবির চালু করেছে পুরসভা। এ নিয়ে পুজোর আগে থেকে শুরু করে মোট ৪টি স্বাস্থ্য শিবির চালু করা হল। পাশাপাশি বেশ কিছু জায়গায় জ্বর হওয়ার পরে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছেন বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁরা কী চিকিৎসা করছেন সে সম্পর্কে পুর প্রশাসন অন্ধকারে। দেখা যাচ্ছে, শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার পরে রোগীদের ভর্তি করা হচ্ছে হাসপাতালে। পোলেনাইট এলাকাতেও এই ধরণের কিছু সমস্যার কথা পৌঁছেছে পুরসভার কাছে। সে বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুর কর্তারা।
তবে নতুন করে পুলিশ আবাসনে জ্বরের প্রকোপ বৃদ্ধির ঘটনা চিন্তা বাড়িয়েছে প্রশাসনের। কেন এই জ্বরের তথ্য পুরসভার কাছে পৌঁছলো না প্রশ্ন করা হলে মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায় বলেন, ‘‘কোন দফতরের অধীনে, কারা কাজ করবেন এ সব পরে দেখা যাবে। বাসিন্দারা আমাদের তথ্য না জানালেও হাসপাতাল কেন জানালো না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে আপাতত দ্রুত মশার উৎস খুঁজে তা ধ্বংস করা এবং এলাকা সাফ করা হবে।’’
যদিও ওই আবাসনে জ্বর এবং ডেঙ্গিতে সংক্রমণের তথ্য মানতে নারাজ পুলিশ প্রশাসন। কলকাতা পুলিশের এক কর্তা জানান, এমন কোনও খবর তাঁদের কাছে নেই। ওইআবাসনে নিয়মিত মশার তেল স্প্রে করা হয়। ফগিং করা হয়।