চলছে গাড়ির গতি মাপার কাজ। বৃহস্পতিবার, লেক টাউনে।—শৌভিক দে
ভিআইপি রোডের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় পথ নিরাপত্তা মজবুত করতে ‘স্পিডগান’-এর ব্যবহার চালু করল পুলিশ। যন্ত্রের মাধ্যমে আইনভঙ্গকারী গাড়ির বিরুদ্ধে অকুস্থলেই মামলা রুজু করা যাবে। প্রথম দিনে লেক টাউন মোড়েই ৪০টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে বলে দাবি পুলিশের।
‘স্পিডগান’ আসলে গোটা তিনেক ক্যামেরা লাগানো একটি যন্ত্র। বন্দুকের মতো ট্রিগার টিপলেই তাতে ছবি ওঠে। কোনও গাড়ির গতি নিয়ে সন্দেহ হলে পুলিশ সেই গাড়ির দিকে ‘স্পিডগান’ তাক করে ট্রিগার টিপবে। তাতে গাড়ির গতি সংক্রান্ত সব তথ্য পাওয়া যাবে।
বৃহস্পতিবার সকালে লেক টাউন মোড়ে ও বিকেলে তেঘরিয়ায় নতুন এই যন্ত্রের ব্যবহার করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, এ দিন স্পিডগান বেশিক্ষণ ব্যবহার করা হয়েছে লেক টাউন মোড়ে। সেখানে সকাল থেকে ৪০টি গাড়িকে জরিমানা করা হয়েছে। আলো কমে আসায় তেঘরিয়ায় স্পিডগানের ব্যবহার বেশিক্ষণ করা যায়নি। ১০টি গাড়িকে জরিমানা করা হয়েছে।
নির্দিষ্ট গতির চেয়ে বেশি গতিতে চলছে মনে হলেই এ দিন সেই গাড়ির দিকে স্পি়ডগান তাক করেছে পুলিশ। বিধাননগরের ডেপুটি কমিশনার (ট্র্যাফিক) সি সুধাকর বলেন, ‘‘নিয়মিত স্পিডগানের ব্যবহার করা হবে ভিআইপি রোডে।’’ বর্তমানে ভিআইপি রোড চওড়া হওয়ায় গাড়ির গতি বেড়েছে। ফলে এই ধরনের যন্ত্রের ব্যবহার জরুরি বলেই মনে করছে পুলিশ।
ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রে খবর, ভিআইপি রোডের বিভিন্ন জায়গায় গতিবেগ বেঁধে দেওয়া আছে। যেমন, লেক টাউনে প্রতি ঘণ্টায় ৫০ কিমি, দমদম পার্কের যে সব জায়গায় বাঁক রয়েছে সেখানে ঘণ্টায় ৩০ কিমি। ভিআইপি রোডের উড়ালপুলের উপরে ঘণ্টায় ৪০ কিমি। কিন্তু নির্ধারিত গতিতে গাড়ি চালান না সিংহভাগ চালকই।
গাড়ির গতি মাপার জন্য বেলেঘাটার কাদাপাড়া মোড়ে ইএম বাইপাসে অনেক দিন আগেই যন্ত্র বসিয়েছে পুলিশ। তার ফলে ওই রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালানোর সময়ে গতি নিয়ে সতর্ক থাকেন গাড়ি চালকেরা। এত দিন ভিআইপি রোডে গতি পরীক্ষার কোনও যন্ত্র না থাকায় একের পর এক দুর্ঘটনাও ঘটেছে। ২০০৮-এ বেপরোয়া গতিতে চলার জন্যেই বাগজোলা খালে বাস পড়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছিল। তার পরে সরকারি স্তরে ভিআইপি রোডের সুরক্ষায় বিভিন্ন পরিকল্পনা করা হলেও কোনওটি তেমন জোরদার হয়নি। এ বার স্পিডগান বসিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালু করল পুলিশ।
এ দিন এক পুলিশ আধিকারিকের কথায়, ‘‘এত দিন পুলিশ কোনও গাড়ি আটকালে চালক বিপজ্জনক গতিতে গাড়ি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করতেন। নতুন এই যন্ত্র এ বার চালকের দোষ হাতেনাতে প্রমাণ করে দেবে।’’