—প্রতীকী চিত্র।
দীর্ঘ দিন ধরেই এলাকায় ছিল চাপা উত্তেজনা। একই পরিবারের ভাইদের মধ্যে কে শাসকদলের কত ঘনিষ্ঠ, তা নিয়ে চলছিল রেষারেষি। পঞ্চায়েত ভোটে সেই দ্বন্দ্ব আরও বাড়ে এক পক্ষ টিকিট পাওয়ায়। সোমবার রাতে পারিবারিক বিবাদ দিয়ে শুরু হলেও তাতে রং লাগে রাজনীতির। পরিস্থিতি সামলাতে নামাতে হয় বিশাল পুলিশবাহিনী। ঘটনায় ৩৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ঘটনাস্থল বালির নিশ্চিন্দা থানার ঠাকুরাণীচক কালীতলা এলাকা। ওই গোলমালের আঁচ গিয়ে পড়ে কিছুটা দূরে সাহেববাগান এলাকাতেও। পুলিশ সূত্রের খবর, কালীতলার বাসিন্দা ষষ্ঠী গায়েন ও খোকন গায়েনের সঙ্গে বিবাদ রয়েছে তাঁদেরই আর এক ভাই অসিতের। তিনি স্থানীয় তৃণমূলের আহ্বায়ক। এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে অসিতের স্ত্রী টিকিট পেয়েছিলেন। উল্টো দিকে, খোকনেরা নির্দল প্রার্থী দাঁড় করান বলে অভিযোগ। তখন থেকেই শুরু গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের। জানা যাচ্ছে, সাম্প্রতিক সময়ে একটি জমির ভাগাভাগি নিয়ে দু’পক্ষের বেশ কয়েক বার বৈঠক হয়। কিন্তু সমাধানসূত্র বেরোচ্ছিল না। সোমবার রাতে ফের বৈঠক হয় বলে খবর।
অভিযোগ, ওই রাতে খোকনের নেতৃত্বে শতাধিক লোক অসিতের বাড়ি ও পানশালায় হামলা চালায়। পানশালার কর্মীদের মারধরের পাশাপাশি ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। বেধড়ক মারা হয় অসিতকে। অচৈতন্য অবস্থায় তাঁকে রাস্তা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে আক্রান্ত হয় পুলিশও। অসিত ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা মলয় দত্তের বাড়ি বালির সাহেববাগানে। সেখানেও হামলা হয় বলে অভিযোগ।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, খোকনের শাগরেদরা বন্দুক ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছে। মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থলে আসেন স্থানীয় বিধায়ক তথা হাওড়া জেলা তৃণমূল সভাপতি কল্যাণ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘ওই সমাজবিরোধীদের বিরুদ্ধে অসিত রুখে দাঁড়িয়েছেন বলেই তাঁকে খুনের চেষ্টা হয়েছে। প্রাক্তন বিধায়কের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে তিনি বিভিন্ন অসামাজিক কাজে যুক্ত। পুলিশকে বলেছি আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে।’’ ষষ্ঠী বলেন, ‘‘খোকন আমার খুড়তুতো ভাই, আর আক্রান্ত অসিত নিজের ভাই। পারিবারিক বিবাদের মধ্যে আমি নেই। অসুস্থতার কারণে ঘটনার সময়ে বাড়িতে ঘুমোচ্ছিলাম।’’