প্রতীকী ছবি।
আমানতকারীদের সঞ্চিত এক কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগে গ্রেফতার হলেন বারুইপুর প্রধান ডাকঘরের প্রাক্তন পোস্টমাস্টার ও দুই ট্রেজ়ারার। তছরুপের এই কাণ্ড প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছিল ডাক বিভাগে। পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় বারুইপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ওই ডাকঘরের সহকারী সুপারিন্টেন্ডেন্ট অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়।
পুলিশ সূত্রের খবর, তছরুপের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরেই ওই ডাকঘরে শুরু করা হয়েছিল বিভাগীয় তদন্ত। তারই ভিত্তিতে বর্তমান পোস্টমাস্টার, সহকারী পোস্টমাস্টার ও ট্রেজ়ারি বিভাগের কয়েক জন কর্মী-সহ মোট সাত জনকে তথ্য গোপনের অভিযোগে সাসপেন্ড করা হয়। গ্রাহকদের সঞ্চিত অত পরিমাণ টাকা কী ভাবে তছরুপ করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তদন্তে নামে বারুইপুর থানার পুলিশ। তার পরেই প্রাক্তন পোস্টমাস্টার ও ট্রেজ়ারার-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত ২৭ এপ্রিল বারুইপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করে জানানো হয়, ডাকঘরের তরফে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে ১ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা জমা দেওয়ার কথা ছিল ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে। কিন্তু অভিযোগ, আমানতকারীদের সেই অর্থের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে জমা পড়েছিল মাত্র ৩৫ লক্ষ টাকা। বাকি এক কোটি টাকা জমাই পড়েনি। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে ওই আর্থিক তছরুপ করা হয়েছে বলে পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে জানানো হয়।
এই ঘটনায় ধৃত এক ট্রেজ়ারার প্রদীপ মারিক বর্তমানে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলতা ডাকঘরে সাব-মাস্টার পদে রয়েছেন। আর এক অভিযুক্ত দেবাশিস রক্ষিত ওই সময়ে বারুইপুর প্রধান ডাকঘরে পোস্টমাস্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ধৃত আর এক ট্রেজ়ারারের নাম রাজেন্দ্র দত্ত। বারুইপুর প্রধান ডাকঘরের অধীনে ৬৮টি ডাকঘর আছে। সেখানে প্রতিদিন ৭০-৭৫ লক্ষ টাকা জমা হয়। এই ঘটনার পরে গ্রাহকদের টাকা রাখা নিয়েই বড়সড় প্রশ্ন উঠেছে।
সূত্রের খবর, তছরুপের ঘটনায় গত ২ মে ওই ডাকঘরের বর্তমান পোস্টমাস্টার দীপঙ্কর দাস, সহকারী পোস্টমাস্টার প্রলয় মণ্ডল ও তৎকালীন ট্রেজ়ারার প্রদীপ মারিক-সহ সাত জনকে সাসপেনশনের নোটিস দেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। এর পরেই দেবাশিস রক্ষিত, প্রদীপ মারিক ও রাজেন্দ্র দত্তকে সোমবার রাতে গ্রেফতার করে বারুইপুর থানা। আর্থিক প্রতারণার ধারায় মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে তারা।