মাদকচক্রে ফের এক বার নাম জড়িয়ে গেল কলেজ-পড়ুয়াদের। শহরের নামী কলেজের তিন ছাত্রকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে প্রচুর পরিমাণে এলএসডি, মাদক ট্যাবলে এবং কেমিক্যাল ড্রাগ।
তবে এই চক্রকে ধরা এত সহজ ছিল না। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাদের কাছে খবর আসে, বেশ কিছু কলেজে ইন্টারনেটে ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমে মাদকের কারবার চলছে। এই চক্র চালাচ্ছে পড়ুয়াদেরই একাংশ।
এ ছাড়াও নিজেদের মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে মাদকের ছদ্মনামেও কেনাবেচা শুরু হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই চেনা বৃত্তের মধ্যে লেনদেন হয় বলে ধরা খুবই কঠিন।যদিও তক্কে তক্কে ছিল পুলিশ। হাতে প্রমাণ না মিললে নামী কলেজের ছাত্রদের গ্রেফতারেও ঝুঁকি থেকে যায়। তাই আগে তথ্য-প্রমাণ জোগাড়ে নামে পড়েন গোয়েন্দারা।
আরও পড়ুন: প্রবেশিকা এ বার রাখছে যাদবপুর
আরও পড়ুন: বেলাগাম স্কুটি, প্রশ্নে পুলিশি নজর
কয়েক জনের নাম জানার পর খদ্দের সেজে হেরিটেজ ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির বিবিএ-এর ছাত্র সৌমিক মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন গোয়েন্দারা। নিজস্ব বৃত্তের মধ্যেই সাধারণত মাদকের কারবার করেন কলেজ পড়ুয়ারা। এ ক্ষেত্রেও এক কলেজ ছাত্রের সহযোগিতা নেওয়া হয়। মাদক কিনতে প্রচুর টাকার টোপ দেওয়া হয়। সাফল্য আসে বুধবার রাতে। মাদক বিক্রি করতে এসেই হাতেনাতে তাঁকে পাকড়াও করে পুলিশ।
এই চক্রে যে আরও অনেকে রয়েছে, তা আগেই জানা গিয়েছিল। সৌমিককে জেরা করে বেশ কয়েকটি নাম উঠে জানা যায়।
হেরিটেজ কলেজেরই কম্পিউটার সায়েন্সের ছাত্র মৃগাঙ্ক বন্দ্যোপাধ্যায়ও একই ভাবে মাকদ সেবন এবং কারবারে জড়িয়ে পড়েছেন বলে খবর আসে। তাঁকে গ্রেফতার করার পর গোয়েন্দারাও আবাক!
মৃগাঙ্কের বাবা শুল্ক দফতরের প্রাক্তন অফিসার। ছেলেও পড়াশোনায় ভাল। কিন্তু ছেলের এই পরিণতিতে হতবাক হয়ে পড়েন তিনিও। তাঁকে জেরা করে গ্রেফতার করা হয় ফিউচার কলেজের ছাত্র কৌস্তব করকে। ধৃত তিন জনের কাছ থেকেই প্রচুর পরিমাণে এলএসডি এবং মাদক ট্যাবলেট উদ্ধার হয়েছে।
কয়েক মাস আগেই নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো অফিসাররা অভিযান চালিয়ে বিধাননগর এবং কলকাতার স্কুল-কলেজের বেশ কয়েক জন পড়ুয়াকে গ্রেফতার করে। তখনই সামনে আসে পড়ুয়াদের মধ্যে অবাধে চলছে মাদকের লেনদেন। প্রধাণত ই়ঞ্জিনিয়ারিং এবং ম্যানেজমেন্ট কলেজগুলোতেই এই ধরনের অবৈধ কারবার ঝাঁকিয়ে বসেছে।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।