প্রতীকী ছবি।
কলসেন্টার খুলে একটি মার্কিন সফটওয়্যার সংস্থার নাম করে বিদেশি নাগরিকদের প্রতারণার অভিযোগে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের গুন্ডাদমন শাখা। সোমবার কড়েয়া থানা এলাকার ব্রাইট স্ট্রিটে হানা দেয় গোয়েন্দাদের একটি দল। সেখান থেকে খুরশিদ জামাল, মহম্মদ আরমান এবং মন্টু সাউ নামে প্রতারণাচক্রের তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইন, প্রতারণা-সহ একাধিক ধারায় লালবাজারের সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। ওই ভুয়ো কলসেন্টারটি কয়েক মাস ধরে চলছিল বলে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন।
মঙ্গলবার ধৃত তিন জনকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয়। সরকারি কৌঁসুলি দীপনারায়ণ পাকড়াশি জানান, কলসেন্টার থেকে হার্ড ডিস্ক, পেনড্রাইভ-সহ অনেক কিছু বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ওই ঘটনার সঙ্গে আরও বেশ কয়েক জন জড়িত রয়েছে। বিচারক মনোদীপ দাশগুপ্ত ধৃতদের ২০ জুলাই পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
পুলিশ জানায়, কয়েক দিন ধরেই খবর আসছিল ব্রাইট স্ট্রিটে কলসেন্টারের আড়ালে বিদেশি নাগরিকদের প্রতারণা করা হচ্ছে। মূলত কলসেন্টার থেকে ভয়েজ় কলে বিদেশিদের ফোন করে ফাঁদ পাতা হত। বিদেশি ওই নাগরিকদের কম্পিউটারের প্রযুক্তিগত সহায়তা করার নাম করে তাঁদের কাছে পাঠানো হত ভাইরাস এবং ম্যালওয়্যারে ভরা সফটওয়্যার। আর সেই সফটওয়্যার ব্যবহার করে বিপাকে পড়তেন ওই গ্রাহকেরা। তার পরে বাধ্য করা হত মোটা অঙ্কের টাকা দিতে। ভয় পেয়ে অনেকেই নির্দিষ্ট বিদেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দিতেন। প্রতারকেরা ডলারের মাধ্যমে লেনদেন করত।
আমেরিকা, কানাডা-সহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের ওই মার্কিন সফটওয়্যার সংস্থার নাম করে ফোন করত কলসেন্টারের কর্মীরা। ফাঁদে ফেলতে ইংরেজি জানা তরুণ-তরুণীদের নিয়োগ করেছিল অভিযুক্তেরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত বছর ব্রিটেনের কয়েক হাজার নাগরিককে একই কায়দায় কলসেন্টার খুলে প্রতারণা করেছিল একটি চক্র। একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার অভিযোগ পেয়ে লালবাজারের গোয়েন্দারা ওই চক্রের সঙ্গে যুক্ত সাত জনকে গ্রেফতার করেছিল।
প্রাথমিক ভাবে গোয়েন্দাদের অনুমান, সোমবার ধৃত প্রতারণা চক্রটি এক লক্ষ মার্কিন ডলার হাতিয়ে নিয়েছে এই ভাবেই। ধৃতদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিদেশি টাকা বিনিময়ের একটি সংস্থার মাধ্যমে ওই টাকা আদায় করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তের পরে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা।