ফাইল ছবি
ধর্মতলায় তৃণমূলের বার্ষিক সভার জমায়েতের প্রস্তুতির জন্য আগের দিন, অর্থাৎ ২০ জুলাই থেকেই ছুটি দিয়ে দেওয়া হল স্কুল। সভায় যাঁরা আসবেন, তাঁদের থাকার ব্যবস্থা মানিকতলা এলাকার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কয়েকটি স্কুলে করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কাউন্সিলর মীনাক্ষী গুপ্ত।
মানিকতলা চালতাবাগান এলাকায় জয়সওয়াল বিদ্যামন্দিরের পড়ুয়ারা বুধবার স্কুলে গিয়ে জানতে পারে, তাদের স্কুল যে ছুটি। ফলে তারা বাড়ি ফিরে যায়। পড়ুয়ারা জানিয়েছে, আগে থেকে তাদের এই ছুটির কথা জানানো হয়নি।
বুধবার বেলা ১২টা নাগাদ ওই স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে পড়ুয়া নেই। কয়েক জন শিক্ষক বসে আছেন। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক চিন্ময় বিশ্বাস জানান, ২১ জুলাইয়ের সভায় বাইরে থেকে আসা লোক স্কুলে থাকবেন বলে স্থানীয় কাউন্সিলর তাঁদের জানিয়েছেন। বলা হয়েছে, এর জন্য স্কুল যেন ২০ জুলাই থেকেই ফাঁকা রাখা হয়। চিন্ময়বাবু বলেন, “তাই আজ থেকে স্কুল ছুটির কথা ঘোষণা করেছি।যে কোনও সময়েই লোকজন চলে আসতে পারেন। এই অবস্থায় কী ভাবে স্কুল খোলা সম্ভব?’’ অনেক শিক্ষক জানালেন, রাতে থাকা এবং শৌচাগার ব্যবহারের জন্যই স্কুল ব্যবহার করা হবে বলে তাঁদের জানানো হয়েছে। একটি হল এবং একতলার কয়েকটি ঘর এ জন্য নেওয়া হচ্ছে। সেগুলি ইতিমধ্যে ফাঁকাও করা হয়েছে।
মানিকতলা এলাকারই আরও একটি স্কুল, রঘুমল আর্য বিদ্যালয়েও বাইরে থেকে আসা অনেক কর্মী-সমর্থকের থাকার কথা। এই স্কুলটি অবশ্য বন্ধ হয়নি। ক্লাস চলছিল। তবে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক দীনেশ সিংহ বলেন, ‘‘কাউন্সিলর আমাদের চিঠি লিখে জানিয়েছেন যে ২০ এবং ২১ তারিখ সমাবেশ উপলক্ষে বাইরে থেকে যাঁরা আসছেন, তাঁদের থাকার জন্য স্কুল ছেড়ে দিতে হবে। তার জন্য প্রস্তুতি ওঁরাই করবেন। আমি বিশেষ কিছু জানি না। লোকজন এলে স্কুল ফাঁকা করে দেব।’’
কাউন্সিলর মীনাক্ষী গুপ্ত বলেন. “শুধু তো স্কুল নয়, আরও বেশ কিছু বাড়ি, ক্লাবঘরও নেওয়া হয়েছে। না হলে লোকজন থাকবেন কোথায়? তবে স্কুলের কোনও ক্ষতি হবে না।’’
শিক্ষা দফতরের খাতায়-কলমে ২১ তারিখ ছুটি নেই। তবে যানজটের আশঙ্কায় পড়ুয়ারা আদৌ স্কুলে যাবে কি না, সন্দেহ রয়েছে। এই আশঙ্কায় বেশির ভাগ বেসরকারি স্কুল ছুটিও দেওয়া হয়েছে। কিছু স্কুলে হবে অনলাইন ক্লাস। সরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের কয়েক জন অভিভাবকের মতে, স্কুল খোলা থাকলেও বুধবার থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে ছুটির পরিবেশ। মানিকতলা এলাকার এক বাসিন্দা শঙ্করলাল সিংহ বলেন, ‘‘এত জায়গা থাকতে ২০ তারিখ থেকেই কেন স্কুলগুলো নিয়ে নেওয়া হচ্ছে? এত লোক থাকার পরে ২২ তারিখ কি স্কুলগুলো পঠনপাঠনের উপযোগী থাকবে? শৌচাগার থেকে শুরু করে ক্লাসরুম, সবই নোংরা হয়ে থাকার আশঙ্কা তো আছেই।’’
অভিভাবকদের অনেকেরই মত, কোভিডের কারণে বার বার দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ থাকার পরে অবশেষে স্কুল খুলেছে। এখন দুই বা তিন দিন টানা ছুটি দেওয়া এড়াতে স্কুলে থাকার এই বন্দোবস্ত না করলেই ভাল হত।