ভুলবশত সেতুতে উঠেও ফের উল্টো দিকে ফেরার পথেই ঘটল বিপত্তি। প্রতীকী ছবি।
নিবেদিতা সেতুতে মোটরবাইক চলাচল যে নিষিদ্ধ, তা তাঁদের জানা ছিল না। ভুলবশত সেতুতে উঠেও ফের উল্টো দিকে ফেরার পথেই ঘটল বিপত্তি। ছোট গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হল দুই যুবকের। শনিবার দুপুরে, নিবেদিতা সেতুর বালিঘাট স্টেশনের কাছে। মৃতদের নাম সাবির মণ্ডল (২২) ও বাচ্চু মণ্ডল (৩০)। দু’জনেরই বাড়ি বাদুড়িয়ায়। ঘটনার পরে তাঁদের উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সাবিরকে মৃত ঘোষণা করা হয়। সঙ্কটজনক অবস্থায় বাচ্চুকে আর জি কর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিছু ক্ষণ পরে সেখানে তিনিও মারা যান।
সাবির অন্যের পুকুরে জাল ফেলে মাছ ধরতেন। বাচ্চু অন্যের জমিতে মৌমাছি প্রতিপালন করতেন। সেই কাজের সূত্রে বিভিন্ন জেলায় যেতেন ওই যুবক। প্রতিবেশী মহম্মদ ইসমাইল মোল্লা বললেন, “বাচ্চু গাড়িতেই সর্বত্র যেতেন। বাইকে যেতেন না। এ দিনই সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ দু’জনে বাইকে করে তারকেশ্বরের দিকে যাবেন বলে বেরোন।” সম্প্রতি বাইক কিনেছিলেন সাবির। দু’জনেই বাড়িতে বলেছিলেন, কাজ শেষ হতে রাত হলে আর ফিরবেন না।
এক প্রতিবেশী বলেন, “ইদের দিনে অন্য গাড়ি পাননি বাচ্চু। তাই সাবিরের বাইক নিয়েই মৌমাছি চাষের জায়গা দেখতে বেরিয়েছিলেন। ওঁরা আগে কখনও নিবেদিতা সেতুতে বাইক নিয়ে যাননি। রাস্তাও চিনতেন না।” দক্ষিণেশ্বরের কাছ থেকে নিবেদিতা সেতুর রাস্তা ধরেন তাঁরা। রাজচন্দ্রপুর টোল প্লাজ়ার কাছে চলে আসেন। সেখানে এক পুলিশকর্মী তাঁদের যেতে বারণ করেন। তখন তীব্র গতিতে বাইক ঘুরিয়ে দক্ষিণেশ্বরের দিকে যেতে থাকেন তাঁরা। রাস্তার বাঁ দিক ঘেঁষে যাচ্ছিল বাইকটি। বালিঘাট স্টেশনের আন্ডারপাস পেরিয়ে নিবেদিতা সেতুতে ওঠার আগেই ঘটে দুর্ঘটনা। জায়গাটি অর্ধচন্দ্রাকৃতি। সেখানেই ঘোরার সময়ে একটি ছোট গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগে বাইকের।
দক্ষিণেশ্বরের দিক থেকে আসছিল ছোট গাড়িটি। চালক হঠাৎ দেখেন,তীব্র গতিতে একটি বাইক ছুটেআসছে। সেটি গাড়ির ডান দিকে ধাক্কা মারে। রাস্তায় ছিটকে পড়েন সাবির। মাথায় হেলমেট থাকলেও তিনি গুরুতর চোট পান। আর পাশের লেনের একটি মালবাহী গাড়ির উপরে গিয়ে পড়েন বাচ্চু। ছোট গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুর গার্ডওয়ালে ধাক্কা মারে। এয়ারব্যাগ খুলে যাওয়ায় রক্ষা পান চালক। বাচ্চুর স্ত্রী ও চার বছরের মেয়ে রয়েছে। সাবির অবিবাহিত।