সরানো হচ্ছে দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটি। রবিবার, গুড়াপে। —নিজস্ব চিত্র।
গুড়াপ-বর্ধমান: তারাপীঠে পুজো দিয়ে গাড়িতে বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল বেহালার এক প্রৌঢ় এবং তাঁর শাশুড়ির। জখম হয়েছেন প্রৌঢ়ের স্ত্রী ও দুই ছেলে। রবিবার বিকেলে হুগলির গুড়াপের বশিপুরে, দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের কলকাতামুখী লেনের ধারে একটি দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে ধাক্কা মারে গাড়িটি। জখম পাঁচ জনকে উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা দু’জনকে মৃত বলে জানান।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের নাম সুমিতকুমার জানা (৫১) ও ইরা মান্না (৬৫)। সুমিতের স্ত্রী রমানিয়া, তাঁদের বড় ছেলে, বছর উনিশের সৌরজিৎ ও ছোট ছেলে, বছর তেরোর সৌরদীপ চিকিৎসাধীন। সৌরজিৎ ও সৌরদীপের মাথায় ও হাতে আঘাত রয়েছে। হতাহতেরা সকলেই বেহালার বনমালী ঘোষাল লেনের একই বাড়ির বাসিন্দা। সুমিতই গাড়িটি চালাচ্ছিলেন। ইরা ঠিক তাঁর পিছনে বসেছিলেন। ধাক্কার অভিঘাতে গাড়িটির সামনের দিক দুমড়ে-মুচড়ে যায়।
দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে এমন দুর্ঘটনা অবশ্য এই প্রথম নয়। এর আগেও একাধিক বার এমন দুর্ঘটনা ও তার জেরে প্রাণহানি হয়েছে। তার পরেও এক শ্রেণির চালকের ওই সড়কের ধারে ট্রাক দাঁড় করানোর প্রবণতা বন্ধ হচ্ছে না। স্থানীয়দের দাবি, দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের পাশে ‘অবৈধ’ ভাবে ট্রাক দাঁড় করানো বন্ধ না করলে ওই পথে দুর্ঘটনা এড়ানো যাবে না। বেআইনি ভাবে যত্রতত্র পার্কিংয়ের সমস্যা নিয়ে সম্প্রতি উষ্মা প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
গাড়িচালকদের খেদ, এই সড়কে চলাচল করতে হয় মোটা টাকা ‘টোল’ দিয়ে। সেখানে রাস্তার ধারে ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ে। হুগলি জেলা গ্রামীণ পুলিশের এক কর্তা অবশ্য দাবি করেছেন, ওই সড়কের দু’ধারে ট্রাক দাঁড় করানো ঠেকাতে নিয়মিত নজরদারি চলে। তা আরও বাড়ানো হবে।
এ দিনের দুর্ঘটনাস্থলের কাছেই, গুড়াপের কংসারীপুর মোড়ে গত ১২ মার্চ জাতীয় সড়ক লাগোয়া চুঁচুড়া-দশঘরা ২৩ নম্বর সড়কে একটি ডাম্পারের ধাক্কায় একটি টোটোর সাত যাত্রী মারা যান। ফের দুর্ঘটনায় গুড়াপে ওই জাতীয় সড়ক ও তার লাগোয়া রাস্তাগুলি দুর্ঘটনাপ্রবণ হয়ে উঠছে বলে মনে করছেন স্থানীয়েরা। তাঁরা পুলিশি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তুলেছেন।