আক্রান্ত: ঠাকুরপুকুরের বাড়িতে জখম শ্যামলী দিন্দা
তিন বছরের ছেলেকে বাড়িতে রেখে তার জন্মদিনের জন্য বাজার করতে বেরিয়েছিলেন দম্পতি। তার পরে অটো না পেয়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন তাঁরা। এমন সময়ে রাস্তাতেই ছুরি হাতে তাঁদের উপরে এক যুবক হামলা চালায় বলে অভিযোগ। ছুরির কোপে স্বামী আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। গালে ছুরির আঘাত লেগে জিভ সাংঘাতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্ত্রীরও। রবিবার রাতে ঠাকুরপুকুরের আনন্দনগর এলাকায় ওই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। হামলাকারী যুবককে গ্রেফতার করেছে ঠাকুরপুকুর থানার পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ঠাকুরপুকুর বাজার থেকে বাছারপাড়া হয়ে বাড়ি ফিরছিলেন অমিত দিন্দা এবং তাঁর স্ত্রী শ্যামলী দিন্দা। সেই সময়ে ব্রজগোপাল সাহা নামে স্থানীয় এক যুবক ওই দম্পতির উপরে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, অভিযুক্তের মানসিক সমস্যা থাকতে পারে। তার বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
যদিও আনন্দনগরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই যুবক আগেও অনেকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে। স্থানীয় এক চায়ের দোকানদারের অভিযোগ, দিন কয়েক আগে অভিযুক্ত ছুরি দেখিয়ে তাঁকে ও তাঁর স্ত্রীকেও খুনের হুমকি দিয়েছিল।
সোমবার আনন্দনগর এলাকার ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, কথা বলা তো দূর অস্ত্, জিভ নাড়াতেও পারছেন না জখম শ্যামলী। চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ। ওই দম্পতির এক আত্মীয় শেফু দিন্দা জানান, বাছারপাড়া দিয়ে ফেরার পথে অভিযুক্ত আচমকাই হামলা চালায়। অমিতের ঘাড়ে-পিঠে একের পর এক কোপ মারা হয়। শ্যামলীর গাল-জিভ এফোঁড় ওফোঁড় করে দেওয়া হয়। তাঁর জিভে ছ’-সাতটি সেলাই পড়েছে। আহত অবস্থায় রাতেই দু’জনকে এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হয়। পেশায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার অমিতকে সেখানে ভর্তি করে নেওয়া হয়। তবে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে শ্যামলীকে। এ দিন বিকেলে ফের শ্যামলীকে চিকিৎসার জন্য এসএসকেএমে নিয়ে যান তাঁর পরিজনেরা।
অন্য দিকে, রবিবার রাতে বেহালার সেনহাটি এলাকার বামাচরণ রায় রোডেও মা ও মেয়ের উপরে কাটারি নিয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে। ঘটনায় সোমনাথ নিয়োগী ওরফে বাপ্পা নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে বেহালা থানার পুলিশ। তদন্তকারীরা জানান, বাপ্পা তার পাশের ঘরে ভাড়া থাকা রেখা হালদার ও তাঁর মেয়ে লতাকে শাবল এবং কাটারি দিয়ে কোপ মারে বলে অভিযোগ। এই ঘটনার পিছনে দুই পরিবারের মধ্যে গোলমাল রয়েছে বলেই প্রাথমিক ভাবে দাবি করেছে পুলিশ।
হামলার পরে হাসপাতালে বেহালার বাসিন্দা রেখা হালদার ও তাঁর মেয়ে লতা হালদার । সোমবার। নিজস্ব চিত্র ।
তদন্তকারীরা জানান, বামাচরণ রায় রোডের ওই বাড়িতে বাপ্পাদের পাশেই ভাড়া থাকে একটি পরিবার। অভিযোগ, রবিবার রাতে আচমকাই বাপ্পা রেখাদেবীদের ঘরে ঢুকে যায়। তার পরে কাটারি দিয়ে প্রথমে লতাকে আক্রমণ করে। মেয়েকে বাঁচাতে এলে কোপ পড়ে রেখাদেবীর উপরেও। এলোপাথাড়ি কোপে মা-মেয়ে মারাত্মক ভাবে আহত হন। দু’জনেই বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সোমবার ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ঘরের বাইরেও রক্তের দাগ ছড়িয়ে রয়েছে। প্রতিবেশীদের অভিযোগ, ঘটনার সময়ে বাপ্পা মত্ত অবস্থায় ছিল। ঘটনার পরে সে ওই এলাকাতেই এক আত্মীয়ের বাড়িতে লুকিয়ে পড়ে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সেখান থেকে বাপ্পাকে গ্রেফতার করে।