প্রতীকী ছবি।
ভুয়ো কল সেন্টারের আড়ালে মোবাইল টাওয়ার বসানোর নামে প্রতারণার ব্যবসা চলছিল গত দু’বছর ধরে। সেই কাজে নিজেদের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে সরকারি ল্যান্ড ফোনের পিবিএক্স-ও বসিয়ে নিয়েছিল প্রতারকেরা। যা থেকে সাধারণ মানুষকে ফোন করে টাকার টোপ দিয়ে চলত প্রতারণা। আর লাগাতার সেই ফোন করতে গিয়েই সম্প্রতি ভবানী ভবনে রাজ্য পুলিশের বেশ কয়েক জন শীর্ষ কর্তাকে মোবাইল টাওয়ার বসানোর প্রস্তাব দিয়ে বসেছিল প্রতারকেরা। সেই সূত্র ধরে সিআইডি-র জালে ধরা পড়ল ভুয়ো কল সেন্টারের চার মহিলা-সহ মোট ১০ জন প্রতারক।
সিআইডি সূত্রের খবর, মঙ্গলবার বিকেলে নিউ টাউনের টেকনো সিটি থানা এলাকার একটি বহুতলের পাঁচতলায় হানা দিয়ে ধরা হয় ওই ১০ জনকে। বাজেয়াপ্ত হয়েছে প্রচুর মোবাইল, ল্যাপটপ এবং হার্ড ডিস্ক।
সিআইডি-র দাবি, ধৃতেরা যে সরকারি মোবাইল সংস্থার ল্যান্ড ফোন ব্যবহার করে প্রতারণার জাল ছড়িয়েছিল, সেই ঠিকানাও ছিল ভুয়ো। গত দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি সংস্থার মোবাইল টাওয়ার বসানোর নাম করে প্রতারণা চালাচ্ছিল চক্রটি। চক্রের মূল মাথা দুর্গাপুরের বাসিন্দা পবন মণ্ডল। সিআইডি-র তল্লাশি অভিযানের পর থেকেই পলাতক সে। পবনের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে গোয়েন্দা সংস্থাটি।
ভবানী ভবন সূত্রের খবর, যে কোনও মোবাইল নম্বর পেলেই তাতে ফোন করে টাওয়ার বসানোর নামে মোটা টাকার লোভ দেখাত এই চক্রটি। আর তা করতে গিয়েই গত সপ্তাহে রাজ্য পুলিশের একাধিক কর্তাকে ফোন করে ওই প্রস্তাব দিয়ে বসে প্রতারকেরা। একাধিক কর্তার কাছে একই ফোন আসতে থাকায় নড়েচড়ে বসে সিআইডি-র সাইবার ক্রাইম কোঅর্ডিনেশন, সাইবার ক্রাইম থানা এবং সাইবার জালিয়াতি দমন শাখা। শীর্ষ কর্তাদের নির্দেশে ওই তিন বিভাগ একসঙ্গে একটি বিশেষ দল তৈরি করে এ দিন হানা দেয় নিউ টাউনের
ওই বহুতলে।
সূত্রের খবর, গোয়েন্দারা যখন হানা দেন, তখনও সেখানে রীতিমতো ফোন করে মোটা টাকার টোপ দেওয়া হচ্ছিল সাধারণ মানুষকে। ফলে হাতেনাতে ধরা পড়ে অভিযুক্তেরা। তদন্তকারীরা জানান, এর আগেও বহু ভুয়ো কল সেন্টারের খোঁজ মিলেছে।
কিছু দিন আগেই মোবাইল টাওয়ার বসানোর নামে মহিলা পরিচালিত একটি কল সেন্টারের আড়ালে প্রতারণা-চক্র ধরা পড়েছে। কিন্তু কোথাও সরকারি টেলিকম সংস্থার ফোন নম্বর ব্যবহার করা হয়নি। ধৃতেরা জেরায় জানিয়েছে, প্রতারিতেরা যাতে সহজে বিশ্বাস করেন, তাই ওই ল্যান্ড ফোন ব্যবহার করা হত।
এক তদন্তকারী অফিসার জানান, ধৃতেরা ওই ল্যান্ড ফোনের পিবিএক্স বসিয়েছিল, যা থেকে একসঙ্গে ৬০টি নম্বরে কথা বলা যেত। কিন্তু বাছবিচার না করে নির্বিচারে ফোন করতে গিয়ে তারা ফোন করে বসে খোদ পুলিশকর্তাদেরই।