বড়বাজারের হোটেলের মালিকের খোঁজে লালবাজার।
বড়বাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় হোটেলের দুই মালিককে খুঁজে বেড়াচ্ছে কলকাতা পুলিশ। হোটেলের মালিক দুই ভাই আকাশ এবং অতুল চাওলার খোঁজে তারা পৌঁছে গেল হাওড়ায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, হাওড়ার গোলাবাড়ি থানা এলাকার অন্তর্গত সাবার্বান পার্ক রোডের বাসিন্দা দু’জনে। সেখানে একটি আবাসনে থাকেন তাঁরা। বুধবার সেখানেই যায় লালবাজারের একটি দল। যদিও সেখানে দুই ভাইকে পাওয়া যায়নি। তবে আকাশ-অতুলের পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কথা বলেছেন পুলিশ আধিকাকিরেরা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই ভাইয়ের কাকা বিএস চাওলা জানিয়েছেন, তাঁর দুই ভাইপো ওই আবাসনে থাকেন না। বছরখানেক আগে তাঁরা অন্যত্র চলে গিয়েছেন। ঘটনার পর থেকে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা চলছে। পরিবারের লোকেরা চাইছেন, দুই ভাই থানায় আত্মসমর্পণ করুন।
মঙ্গলবার রাতে বড়বাজারের মেছুয়ার ফলপট্টির ওই হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই হোটেলের সুরক্ষা ব্যবস্থায় নানা গাফিলতি প্রকাশ্যে এসেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, হোটেলে দাহ্য পদার্থ মজুত ছিল। হোটেলের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। বুধবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দমকলের ডিজি রণবীর কুমার জানিয়েছেন, ওই হোটেলের ‘ফায়ার লাইসেন্স’-এর মেয়াদ শেষ হয়েছিল তিন বছর আগেই। তার পর তা আর নবীকরণ করাননি হোটেল কর্তৃপক্ষ। হোটেলে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা থাকলেও অগ্নিকাণ্ডের সময় সেটি কাজ করেনি। দমকলের প্রাথমিক অনুমান, আদৌ অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা কার্যকর ছিল না ওই হোটেলে। দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু জানিয়েছেন, অগ্নিকাণ্ডের সময় হোটেলে ‘ফায়ার অ্যালার্ম’ বাজেনি।
প্রাথমিক তদন্তের পর দমকল আধিকারিকেরা মনে করছেন, হোটেলের দোতলায় প্লাইউডের কাজ চলছিল। আর দোতলা থেকেই আগুন এবং ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে। ধোঁয়া ক্রমশ উপরের দিতে উঠতে থাকায় তিনতলা কিংবা চারতলায় থাকা আবাসিকেরা হোটেলের নীচে নামতে পারেননি। এখানেই প্রশ্ন উঠেছে যে, কেন উপরের তলাগুলিতে থাকা জানলা দিয়ে ধোঁয়া বেরোতে পারল না। হোটেলটিতে কেন্দ্রীয় বাতানুকূল ব্যবস্থা বা সেন্ট্রাল এসি নেই। তা সত্ত্বেও কেন অধিকাংশ জানলা বন্ধ ছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও দায়ের করেছে দমকল। ঘটনার তদন্তে ইতিমধ্যেই সিট গঠন করেছে লালবাজার। কলকাতা পুলিশের ডিসি সেন্ট্রালের নেতৃত্বে ১১ জনের ওই দল ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।