নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে ‘লুক আউট’ নোটিস ।
বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য বিজেপির নিলম্বিত জাতীয় মুখপাত্র নূপুর শর্মাকে হাজিরা দিতে বলেছিল কলকাতার দুই থানা। এবার বিজেপির নিলম্বিত জাতীয় মুখপাত্র নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে ‘লুক আউট’ নোটিস জারি করল কলকাতা পুলিশ। টুইটারে জানিয়েছে এএনআই।
এর আগে কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিট এবং নারকেলডাঙা থানা সমন পাঠিয়ে হাজিরা দিতে বলেছিল নূপুর শর্মাকে। গত সোমবার কলকাতা পুলিশের কাছে তাঁর হাজিরা দেওয়ার কথা থাকলেও আসেননি। জীবনের ঝুঁকি রয়েছে জানিয়ে কলকাতা পুলিশের থেকে চার সপ্তাহ সময় চেয়েছিলেন নূপুর। সেই সময় সংবাদসংস্থা জানিয়েছিল, কলকাতা পুলিশকে একটি ইমেল পাঠিয়েছিলেন নূপুর। সেই ইমেলে তিনি চার সপ্তাহ পরে নারকেলডাঙা থানায় হাজিরা দিতে পারবেন বলে জানিয়েছিলেন।
কিন্তু চার সপ্তাহ সময় পেরিয়ে গেলেও তিনি হাজিরা দেননি। তাই এবার লুকআউট নোটিস জারি করল কলকাতা পুলিশ। নূপুরের বিতর্কিত মন্তব্যের পরে দেশের নানা প্রান্তে ক্ষোভের আগুন জ্বলে ওঠে। মহারাষ্ট্র এবং দিল্লিতেও অভিযোগ দায়ের হয়। আঁচ পড়ে বাংলাতেও। এর পরেই কলকাতা-সহ রাজ্যের অনেক জায়গায় নূপুরের নামে এফআইআর জমা পড়ে। নারকেলডাঙা থানা এমনই এক অভিযোগের ভিত্তিতে নূপুরকে ২০ জুনের মধ্যে সশরীরে হাজিরা দিতে বলেছিল। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪১ এ ধারায় নোটিস পাঠানো হয় নূপুরকে। সেই হাজিরাই পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন নূপুর।
এর আগে ঘৃণাভাষণের অভিযোগে নূপুরের বিরুদ্ধে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি থানাতেও একটি এফআইআর দায়ের করেন তৃণমূলের রাজ্যের সংখ্যালঘু সেলের সাধারণ সম্পাদক তথা আইনজীবী আবু সোহেল। নূপুরের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছায় শান্তিভঙ্গের প্ররোচনা দেওয়া, হুমকি দেওয়া-সহ নানা ধারায় মামলা করা হয়। নূপুরকে দ্রুত গ্রেফতার করা না হলে প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করার হুঁশিয়ারিও দেন ওই অভিযোগকারী।
প্রসঙ্গত, কারও বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিস জারি হলে তিনি দেশ ছেড়ে যেতে পারেন না। সাধারণত, পুলিশ বা অন্য কোনও তদন্তকারী সংস্থা কোনও ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ বা অন্য কোনও কারণে তলব করার পরও সেই ব্যক্তি হাজির না হলে তাঁর বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিস জারি করতে পারে। সে ক্ষেত্রে যাঁর বিরুদ্ধে লুক আউট সার্কুলার জারি হয়, তিনি দেশ ছাড়তে পারেন না।
বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে সুপ্রিম কোর্ট শুক্রবার বিজেপি নেত্রী নূপুরকে ভর্ৎসনা করে। শীর্ষ আদালত বলে, নূপুরকে গোটা দেশের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। দেশে এই মুহূর্তে যে অশান্তি চলছে, তার জন্য একা নূপুরকেই দায়ী করে শীর্ষ আদালত। বিচারপতি সূর্যকান্ত শুক্রবার বলেন, ‘‘আমরা ওই বিতর্কসভাটি দেখেছি। যে ভাবে কথাগুলো বলেছেন, তা-ও দেখেছি। আপনি নিজে এক জন আইনজীবী হয়ে যা করেছেন, তা লজ্জার। আপনার উচিত সারা দেশের কাছে ক্ষমা চাওয়া।’’
এর পরই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানায় বিরোধীরা। তাদের দাবি, নূপুরের পাশাপাশি ক্ষমা চাক বিজেপিও। লজ্জায় শাসকদলের মাথা নত হওয়া উচিত। এই ভাষাতেই কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করেছেন বিরোধী নেতারা।