Opposition candidates abduction case

‘আমরা অপহৃত নই’! চিঠি সত্ত্বেও বিরোধীদের চার বিজয়ী প্রার্থীর ‘উধাও’ রহস্য এখনও কাটল না

অপহরণের অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার পঞ্চসায়র থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন সিপিএমের বর্ষীয়ান নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসকদল।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৩ ২০:৪৪
Share:

বৃহস্পতিবার রাতে ‘অপহরণের’ সিসিটিভি ফুটেজ, দাবি সিপিএমের। ছবি: ভিডিয়ো।

কলকাতার অতিথিশালা থেকে ‘অপহৃত’ বিজেপির তিন জয়ী প্রার্থী এবং জয়ী বাম সমর্থিত এক নির্দল প্রার্থীকে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় দেখা গিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পর এমনই তথ্য উঠে এল কলকাতা পুলিশ সূত্রে। লালবাজার সূত্রে খবর, এর মধ্যে পঞ্চসায়র থানায় একটি চিঠিও এসেছে। চার জন ‘অপহৃতের’ নাম থাকা ওই চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, তাঁরা ‘অপহৃত’ হননি। তাঁদের নিয়ে যাতে কোনও গুজব না ছড়ানো হয়, সেই বিষয়টিও দেখতে বলা হয়। যদিও চিঠিটি ‘অপহৃত’দেরই লেখা কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার রাতে সিপিএমের বর্ষীয়ান নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় পঞ্চসায়র থানায় অপহরণের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁর অভিযোগ, পঞ্চসায়র থানা এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালের কাছের এক অতিথিশালা থেকে চার জয়ী প্রার্থীকে অপহরণ করেছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। তার একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজও প্রকাশ্যে এসেছে। সেটির সত্যতা অবশ্য আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি। কান্তির অভিযোগ, মথুরাপুর ব্লকের কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের জন্য বিরোধীদের উপর চাপ সৃষ্টি করছিল তৃণমূল। শাসকদলের শাসানি, হুমকিতে মাথা নত না করে মঙ্গলবার রাতে পঞ্চসায়রের অতিথিশালায় আশ্রয় নেন শাসকদলের বিরোধী জয়ী প্রার্থীরা। সেখান থেকেই তাঁদের আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে অপহরণ করা হয়েছে।

লালবাজার সূত্রে খবর, কলকাতা পুলিশের ডিসি (পূর্ব) আরিশ বিলালের নেতৃত্বে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তকারীদের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, শুক্রবার অপহৃত চার জনকে দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলায় দেখা গিয়েছে। ঘটনাচক্রে, শুক্রবার সকালেই কান্তি দাবি করেছিলেন, ‘অপহৃত’দের মথুরাপুর-১ ব্লকের একটি অতিথিশালায় রাখা হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চসায়র থানায় ওসির নামেও একটি চিঠি এসেছে এর মাঝে। ‘অপহৃত’ চার জনের ‘স্বাক্ষর’ থাকা ওই চিঠিতে লেখা ছিল— ‘‘আমাদের কেউ অপহরণ করেনি। আমরা স্বেচ্ছায় গিয়েছি। আমাদের নিয়ে যেন কোনও গুজব না ছড়ানো হয়।’’ যদিও চিঠি ‘অপহৃতেরা’ই লিখেছেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়াও প্রকাশ্যে আসা সিসিটিভি ফুটেজে কোনও আগ্নেয়াস্ত্রের হদিস মেলেনি বলেও খবর মিলেছে তদন্তকারীদের সূত্রে।

কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন ১৫টি। এই পঞ্চায়েত ভোটে সেখানে তৃণমূল জেতে চারটি আসনে। সিপিএম পায় তিনটি এবং বিজেপি ছ’টি। দু’টি আসনে জেতেন নির্দল প্রার্থীরা। সিপিএমের দাবি, শুক্রবার নিরাপত্তার দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ছিল বিরোধী ওই প্রার্থীদের। তার আগে তাঁদের অপহরণ করা হল। এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসকদল তৃণমূল। দলের সুন্দরবন সাংগঠনিক জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি বাপি হালদার বলেন, ‘‘বিরোধীরা মিথ্যা অভিযোগ করছে। ওরা নিজেদের জয়ী প্রার্থীদের ধরে রাখতে পারছে না। এতে শাসকদলের কী করার আছে? তৃণমূল অপহরণের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। কাউকে অপহরণ করার প্রয়োজনও নেই আমাদের। ওরা নিজেদের প্রার্থীদের ধরে রাখতে না পেরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে। তৃণমূলকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement