শহরে রোগের প্রকোপ কমাতে চায় কলকাতা পুরসভা। ফাইল চিত্র।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের জেরে নাজেহাল হয়েছিল গোটা বিশ্ব। শহর কলকাতাও সেই মহামারীর দাপট দেখেছিল। কিন্তু কোভিড টিকা আসার পর সেই রোগের প্রকোপ বর্তমানে অনেকটাই কমে গিয়েছে। কিন্তু জ্বর, সর্দি, কাশি-সহ বিভিন্ন সংক্রামক এবং মশাবাহিত রোগের প্রকোপ প্রায়শই দেখা যায় শহর কলকাতায়। প্রায় প্রতি বছরই নিয়ম করে মহানগরীতে থাবা বসায় ডেঙ্গু-ম্যালেরিয়ার মতো প্রাণঘাতী পতঙ্গবাহিত রোগ। এ বার সেই সমস্ত রোগের মোকাবিলা করতে কলকাতা শহরের প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে একটি করে স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু করতে চাইছে কলকাতা পুরসভা। সূত্রের খবর, ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির নাম দেওয়া হবে ‘স্যাটেলাইট হেলথ সেন্টার’। গত কয়েক বছর ধরেই সব ওয়ার্ডে স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালুর ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছিল পুরসভা। এত দিন পর সেই বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার পাশাপাশি, এ বছর আবার অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হতে শুরু করেছেন শহরবাসী। যার জেরে কয়েকটি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। এই রোগের প্রকোপ রুখতে পুরসভা উদ্যোগ নেওয়া শুরু করেছে। কিন্তু সব ওয়ার্ডে স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে যে কোনও রোগের দ্রুত মোকাবিলা করার বিষয়ে মনস্থির করেছে কলকাতা পুরসভা। তাই ‘স্যাটেলাইট হেলথ সেন্টার’ গড়তে ইতিমধ্যে গতি এসেছে পুর প্রশাসনে।
কলকাতা পুরসভার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক জানাচ্ছেন, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কেন্দ্র-রাজ্যের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল ১৫ হাজার মানুষ পিছু একটি করে স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়তে হবে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পুরসভা ‘স্যাটেলাইট হেলথ সেন্টার’ গড়ার বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছে। বর্তমানে কমবেশি কলকাতা পুরসভার অর্ধেক ওয়ার্ডে স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। বছরের বিভিন্ন সময় সংক্রামক ও পতঙ্গবাহিত রোগের কারণে সেই সমস্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে পরিষেবার চাপ বেড়ে যায়। একটি ওয়ার্ডে থাকা স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে অন্য ওয়ার্ডগুলির রোগীদেরও চাপ বহন করতে হয়। তাই এ বার সেই চাপ কমাতে প্রত্যেক ওয়ার্ডেই ‘স্যাটেলাইট হেলথ সেন্টার’ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নতুন এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি করতে পুরসভাকে সাহায্য করবে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। ইতিমধ্যেই, কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের ৮২ নম্বর ওয়ার্ডের চেতলায় একটি করে ‘স্যাটেলাইট হেলথ সেন্টার’ চালু হয়েছে। পাশাপাশি, উত্তর কলকাতার বেলগাছিয়ায় ৩ নম্বর ওয়ার্ডের জেকে ঘোষ রোডেও আরও একটি ‘স্যাটেলাইট হেলথ সেন্টার’ চালু হয়েছে। প্রথম পর্বে শহরে মোট ৫৯টি এই ধরনের স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু হবে। এই কেন্দ্রগুলির জন্য নতুন করে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করা হচ্ছে।